Advertisement
১৯ মে ২০২৪
তোপ তৃণমূলকে

পরিবারতন্ত্র ও ঠিকাদারি প্রশ্নেই আক্রমণ বিজেপির

কাউন্সিলরদের ঠিকাদারি আর প্রার্থী তালিকায় পরিবারতন্ত্রের ছাপ— তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই দু’টি বিষয়কে হাতিয়ার করেই তমলুকে ভোটযুদ্ধে নামছে বিজেপি। এই মর্মেই পুরভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার তমলুক শহরের শঙ্করআড়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ইস্তাহার প্রকাশ করেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস ও জেলা সহ-সভাপতি মলয় সিংহ-সহ বিজেপির তমলুক শহরের নেতারা।

নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ বিজেপি নেতৃত্বের। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ বিজেপি নেতৃত্বের। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩০
Share: Save:

কাউন্সিলরদের ঠিকাদারি আর প্রার্থী তালিকায় পরিবারতন্ত্রের ছাপ— তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই দু’টি বিষয়কে হাতিয়ার করেই তমলুকে ভোটযুদ্ধে নামছে বিজেপি। এই মর্মেই পুরভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার তমলুক শহরের শঙ্করআড়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ইস্তাহার প্রকাশ করেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস ও জেলা সহ-সভাপতি মলয় সিংহ-সহ বিজেপির তমলুক শহরের নেতারা।

তমলুক পুরসভা নিয়ে বিজেপির এই ইস্তাহারে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘আর কতদিন পুর-এলাকার সাধারণ মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকার নাগরিক পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রতারক দ্বারা প্রতারিত হবেন, যাদের লক্ষ্য ঠিকাদার পরিবেষ্টিত পুরবোর্ড। ঠিকাদার ও কাউন্সিলর শব্দ দুটি সমার্থক হয়ে উঠেছে তাম্রলিপ্ত পুররবোর্ডে।’ বিজেপি-র প্রতিশ্রুতি, ‘বর্তমান ঠিকাদার ভিত্তিক পৌরবোর্ডের বদলে স্বচ্ছ প্রশাসন গড়ে তোলা হবে’। তমলুক পুরসভার ক্ষমতা ছিল তৃণমূল। ফলে ইস্তাহারে সরাসরি নাম না করলেও বিজেপি-র আক্রমণের লক্ষ্য যে তৃণমূল তা স্পষ্ট।

একই ভাবে বিজেপি-র ইস্তাহারে শাসকদলের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগও তোলা হয়েছে। ইস্তাহারে লেখা হয়েছে, ‘কোথাও মহিলা প্রার্থী হলে নিজের স্ত্রী বা মহিলা পরিজনকে জিতিয়ে আনার মাধ্যমে ব-কলমে নিজের ক্ষমতা ধরে রাখার প্রয়াস। এমন ভাব যেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী-পরিবার দেশ সেবায় নিয়োজিত প্রাণ। যেন তাঁর দলে বা ওয়ার্ডে আর কোনও মহিলা কর্মী প্রার্থী হওয়ার যোগ্যই নন’। এ বার তমলুকে চারটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলরের স্ত্রী (৯ ও ১৮ নম্বরে) অথবা স্বামী (৪ ও ১৬ নম্বরে)।

এ দিন বিজেপি-র ইস্তাহার প্রকাশ করে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি পুরবোর্ড গঠন করলে ঠিকাদার রাজ দূর করে স্বচ্ছভাবে পুরসভার কাজ করা হবে।’’ সুকুমারবাবুদের আরও প্রতিশ্রুতি, রূপনারায়ণ নদকে ব্যবহার করে তমলুক শহরে আধুনিক নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। নদীভিত্তিক পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্প তৈরি করা হবে। প্রাচীন তাম্রলিপ্ত শহরকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে। তমলুক শহরে গাড়ি নির্মাণ শিল্পের উন্নয়নে অটো-হাব তৈরি করা হবে। শহরের জঞ্জাল থেকে সার তৈরিও করা হবে।

তৃণমূল অবশ্য দুই অভিযোগই উড়িয়ে দিচ্ছে। তমলুকের বিদায়ী তৃণমূল পুরপ্রধান তথা এ বার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী দেবিকা মাইতি বলেন, ‘‘বিদায়ী পুরবোর্ডের ২০ জন কাউন্সিলরের মধ্যে মাত্র দু’জন ঠিকাদার। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে বিজেপি-র ইস্তাহারে তোলা অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। আর যাঁদের নিয়ে বলা হচ্ছে তাঁরা পেশাগত ভাবে ঠিকাদার। তাঁরা পুরসভার কোনও কাজ করেন না।’’ আর পুর-নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলরদের আত্মীয়-পরিজনদের প্রার্থী করা নিয়ে দেবিকাদেবীর বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী বেছেছে দল। কোনও কাউন্সিলর বা প্রার্থী নিজের ইচ্ছেমতো প্রার্থী হননি।’’ দেবিকাদেবীর আরও কটাক্ষ, ‘‘এর আগে তমলুক পুরসভার একই ওয়ার্ডে (বর্তমান ১ নম্বর ওয়ার্ড) বিজেপি প্রার্থী হিসেবে একবার স্ত্রী, একবার স্বামী স্থান পেয়েছিলেন। ফলে বিজেপি আগে নিজেদের দলের মূল্যায়ন করুক।’’

অন্য দিকে বিজেপি-র অভিযোগকে গুরুত্বই দেননি তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে বিজেপি এমন কোনও শক্তি নয় যে তাদের তোলা অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে হবে। আগে ওরা পুরসভায় জিতে দেখাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE