Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মাথায় ‘হাত’ নেই, তবু লড়াই ছাড়তে নারাজ রিনা

শুধু হাতজোড় করে ভোট প্রার্থনা বা লিফলেট বিলি নয়। সরাসরি ভোটারদের হেঁশেলে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে মুড়ি-চিড়ে খেতে খেতে শুনে নিচ্ছেন তাঁদের পছন্দ-অপছন্দের কথা। চৈত্রের রোদকে পাত্তা না দিয়ে সাইকেলে করে ওয়ার্ডের আনাচে-কানাচে চক্কর মানছেন। ভোটারদের কাছে তাঁর প্রার্থনা একটাই, দলীয় প্রতীক চিহ্ন দেখে নয়, উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে আর্শীবাদ করুন সাধারণ মানুষ।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট প্রচার করছেন রিনা দাস।—নিজস্ব চিত্র।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট প্রচার করছেন রিনা দাস।—নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত গুহ
কাঁথি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১৯
Share: Save:

শুধু হাতজোড় করে ভোট প্রার্থনা বা লিফলেট বিলি নয়। সরাসরি ভোটারদের হেঁশেলে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে মুড়ি-চিড়ে খেতে খেতে শুনে নিচ্ছেন তাঁদের পছন্দ-অপছন্দের কথা। চৈত্রের রোদকে পাত্তা না দিয়ে সাইকেলে করে ওয়ার্ডের আনাচে-কানাচে চক্কর মানছেন। ভোটারদের কাছে তাঁর প্রার্থনা একটাই, দলীয় প্রতীক চিহ্ন দেখে নয়, উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে আর্শীবাদ করুন সাধারণ মানুষ। শেষ হাসি কে হাসবেন, তা সময় বলবে। তবে প্রচারে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না কাঁথি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী রিনা দাস।

রিনাদেবী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মহিলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী। ২০১০ সালে পুরভোটেও কংগ্রেস ও বাম দলের মিলিত মোর্চার সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়েছিলেন। তবে তাঁকে শাসকদলের কাছে হারতে হয়। এ বার অবশ্য কংগ্রেস তাঁর পাশে নেই। কংগ্রেস এ বার তাঁর বিরুদ্ধে মহম্মদ আহাসানউল্লা খানকে প্রার্থী করেছে। তাই নির্দল হিসেবেই বাজিমাত করতে চাইছেন রিনাদেবী। এ বারও নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়ানোর কারণ কী?

পেশায় একটি হাইস্কুলের চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষিকা বছর চল্লিশেক বয়সী অবিবাহিতা রিনাদেবীর কথায়, ‘‘এই ওয়ার্ডে দলমত নির্বিশেষে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে ভালোবাসেন। কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়ালে তাঁরা আমাকে ভোট দেবেন না। তাই সেই সব মানুষের কথা চিন্তা করেই নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছি।” প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কী সাধারণ মানুষের মধ্যে কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতা কমছে বলে তিনি মনে করেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। নির্দল হিসেবে দাঁড়ালে অন্য দলের অনেকেও আমাকে ভোট দেবেন, তা জানি। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

রিনাদেবীর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসকে জানিয়েই তিনি নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। তা সত্ত্বেও দল তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। অথচ কাঁথি পুরসভার সব ওয়ার্ডে কংগ্রেস কিন্তু প্রার্থী দিতে পারেনি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কাঁথির কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের একাংশ তৃণমূলের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাই কংগ্রেসের এক জেলা সাধারণ সম্পাদক তৃণমূলের স্বার্থেই জোর করে এমন এক জনকে প্রার্থী করেছে, যাঁকে ওয়ার্ডের বেশির ভাগ মানুষই চেনেন না।’’ যদিও কংগ্রেসে প্রার্থী মহঃ আহাসানউল্লার কথায়, “দল আমাকে প্রার্থী করেছে। সাধারণ মানুষ আমাকে চেনেন কি না, সেটা ভোটের পর বোঝা যাবে।’’ তাঁরা দাবি, রিনাদেবী আদতে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কিন্তু তিনি ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিনাদেবীর পাল্টা জবাব, ‘‘৬ নম্বর ওয়ার্ডের বতর্মান কাউন্সিলর সুপ্রকাশ মাইতিও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।’’

৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী দেয়নি বামফ্রন্ট। বামেদের ইস্তাহারে রিনাদেবীকে বাম সমর্থিত হিসাবে প্রার্থী হিসেবে দেখানো হয়েছে। সিপিএমের কাঁথি জোনাল কমিটির সম্পাদক হরপ্রসাদ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডে বামফ্রন্ট প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু গত পুরভোটে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা প্রার্থী ছিলেন রিনাদেবী। তাই এ বার ওই মোর্চার প্রার্থী হিসেবেই তাঁকে লমর্থন করেছি।’’ তাঁর রিনাদেবীর দাবি, বামফ্রন্টের কাছে তিনি সমর্থনের জন্য আবেদন করেননি। তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবেই লড়ছেন।

কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর যতই বিরোধ থাকুক, তাঁদের প্রচারের হাতিয়ার অবশ্য অনুন্নয়নই। তাঁদের দু’জনেরই অভিযোগ, ‘‘ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ বলতে গেলে কিছুই হয়নি। ওয়ার্ডের দশ শতাংশ বাড়িতেও জলের লাইন পৌঁছয়নি। বস্তি এলাকাগুলিতেও পানীয় জল সরবরাহের অবস্থা তথৈবচ।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় আবর্জনায় অবরুদ্ধ নিকাশি নালা। সেই কারণেই এই ওয়ার্ডে এ বার বিদায়ী কাউন্সিলরকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। সম্পর্কে বিদায়ী কাউন্সিলরের ভাই প্রকাশ মাইতিকে প্রার্থী করা হয়েছে।’’

অনুন্নয়নের অভিযোগ অস্বীকার করে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ মাইতি জানান, গোটা ওয়ার্ড জুড়েই পানীয় জল সরবরাহের পাইপ লাইন পাতা হয়েছে। বাড়িতে জলের লাইন বসানোর জন্য পুরসভায় নির্ধারিত পরিমাণ টাকা-সহ আবেদন করলেই বাড়িতে জলের লাইন দেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে নিম্নবিত্তরাও যাতে বাড়িতে জলের লাইন নিতে পারেন, সে জন্য টাকার পরিমাণ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ঢালাই করা ছাড়াও সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে খাল খনন করে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার কাজ হয়েছে। প্রকাশবাবুর দাবি, মানুষ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তৃণমূলকেই ভোট দেবেন।

শেষ হাসি কে হাসবেন, তা সময় বলবে। তবে প্রচারে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না কাঁথি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী রিনা দাস।

রিনাদেবী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মহিলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী। ২০১০ সালে পুরভোটেও কংগ্রেস ও বাম দলের মিলিত মোর্চার সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়েছিলেন। তবে তাঁকে শাসকদলের কাছে হারতে হয়। এ বার অবশ্য কংগ্রেস তাঁর পাশে নেই। কংগ্রেস এ বার তাঁর বিরুদ্ধে মহম্মদ আহাসানউল্লা খানকে প্রার্থী করেছে। তাই নির্দল হিসেবেই বাজিমাত করতে চাইছেন রিনাদেবী। এ বারও নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়ানোর কারণ কী?

পেশায় একটি হাইস্কুলের চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষিকা বছর চল্লিশেক বয়সী অবিবাহিতা রিনাদেবীর কথায়, ‘‘এই ওয়ার্ডে দলমত নির্বিশেষে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে ভালোবাসেন। কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়ালে তাঁরা আমাকে ভোট দেবেন না। তাই সেই সব মানুষের কথা চিন্তা করেই নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছি।” প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কী সাধারণ মানুষের মধ্যে কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতা কমছে বলে তিনি মনে করেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। নির্দল হিসেবে দাঁড়ালে অন্য দলের অনেকেও আমাকে ভোট দেবেন, তা জানি। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

রিনাদেবীর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসকে জানিয়েই তিনি নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। তা সত্ত্বেও দল তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। অথচ কাঁথি পুরসভার সব ওয়ার্ডে কংগ্রেস কিন্তু প্রার্থী দিতে পারেনি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কাঁথির কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের একাংশ তৃণমূলের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাই কংগ্রেসের এক জেলা সাধারণ সম্পাদক তৃণমূলের স্বার্থেই জোর করে এমন এক জনকে প্রার্থী করেছে, যাঁকে ওয়ার্ডের বেশির ভাগ মানুষই চেনেন না।’’ যদিও কংগ্রেসে প্রার্থী মহঃ আহাসানউল্লার কথায়, “দল আমাকে প্রার্থী করেছে। সাধারণ মানুষ আমাকে চেনেন কি না, সেটা ভোটের পর বোঝা যাবে।’’ তাঁরা দাবি, রিনাদেবী আদতে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কিন্তু তিনি ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিনাদেবীর পাল্টা জবাব, ‘‘৬ নম্বর ওয়ার্ডের বতর্মান কাউন্সিলর সুপ্রকাশ মাইতিও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।’’

৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী দেয়নি বামফ্রন্ট। বামেদের ইস্তাহারে রিনাদেবীকে বাম সমর্থিত হিসাবে প্রার্থী হিসেবে দেখানো হয়েছে। সিপিএমের কাঁথি জোনাল কমিটির সম্পাদক হরপ্রসাদ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডে বামফ্রন্ট প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু গত পুরভোটে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা প্রার্থী ছিলেন রিনাদেবী। তাই এ বার ওই মোর্চার প্রার্থী হিসেবেই তাঁকে লমর্থন করেছি।’’ তাঁর রিনাদেবীর দাবি, বামফ্রন্টের কাছে তিনি সমর্থনের জন্য আবেদন করেননি। তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবেই লড়ছেন।

কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর যতই বিরোধ থাকুক, তাঁদের প্রচারের হাতিয়ার অবশ্য অনুন্নয়নই। তাঁদের দু’জনেরই অভিযোগ, ‘‘ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ বলতে গেলে কিছুই হয়নি। ওয়ার্ডের দশ শতাংশ বাড়িতেও জলের লাইন পৌঁছয়নি। বস্তি এলাকাগুলিতেও পানীয় জল সরবরাহের অবস্থা তথৈবচ।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় আবর্জনায় অবরুদ্ধ নিকাশি নালা। সেই কারণেই এই ওয়ার্ডে এ বার বিদায়ী কাউন্সিলরকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। সম্পর্কে বিদায়ী কাউন্সিলরের ভাই প্রকাশ মাইতিকে প্রার্থী করা হয়েছে।’’

অনুন্নয়নের অভিযোগ অস্বীকার করে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ মাইতি জানান, গোটা ওয়ার্ড জুড়েই পানীয় জল সরবরাহের পাইপ লাইন পাতা হয়েছে। বাড়িতে জলের লাইন বসানোর জন্য পুরসভায় নির্ধারিত পরিমাণ টাকা-সহ আবেদন করলেই বাড়িতে জলের লাইন দেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে নিম্নবিত্তরাও যাতে বাড়িতে জলের লাইন নিতে পারেন, সে জন্য টাকার পরিমাণ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ঢালাই করা ছাড়াও সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে খাল খনন করে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার কাজ হয়েছে। প্রকাশবাবুর দাবি, মানুষ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তৃণমূলকেই ভোট দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE