রক্ষণাবেক্ষণ নেই। শ্রী হারাচ্ছে চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন পার্ক।
বাম আমলে খড়্গপুর-আদ্রা রেল লাইনের ধারে চন্দ্রকোনা রোডে পার্কটি তৈরি করে বন দফতর। পার্কের ভিতরেই রেসকিউ সেন্টারে ছিল একাধিক হরিণ। ছিল পাখিরালয় থেকে টয় ট্রেন। শাল-সেগুনের জঙ্গলে রঙিন মরসুমি ফুলের বাগান মন টানত খুদেদের। বছর খানেক আগেও শীত পড়লেই অনেকেই বনভোজন করতে আসতেন পার্কে। শুধু মেদিনীপুর নয়। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকেও অনেকে আসতেন বনভোজন করতে। রয়েছে বিশ্রামাগারও।
নজরদারির অভাবে এখন সবই অতীত। প্রায় একশো একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই পার্কে রাত হলেই অসামাজিক কাজকর্মও চলে বলে অভিযোগ। পার্কে নেই পর্যাপ্ত আলো। সীমানা প্রাচীরও কয়েক জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। নিয়মিত পার্ক সাফাই হয় না। হতশ্রী দশা শৌচাগারেরও।
এক সময় যে ট্রয় ট্রেন চড়ার জন্য অনেক খুদে ভিড় জমাত পার্কে, সেই পরিষেবাও তিমিরে। রেল লাইনের ট্র্যাকের কাঠ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জীর্ণ টয় ট্রেনের যন্ত্রাংশও। রেসকিউ সেন্টারে হরিণও নেই। পাখিরালয়ে ময়ূর, বদরি, জাভা, ককটেলের মতো কিছু পাখি থাকলেও দুর্গন্ধে টেকা দায়।
গড়বেতার বাসিন্দা সুন্দর মজুমদারের অভিযোগ, “দিনদিন পার্কে ঢোকার টাকার পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু উন্নতির বদলে শ্রীহীন হয়ে পড়ছে পার্কটি।” চন্দ্রকোনা রোডের গৃহবধূ উমা সরকার, কলেজ ছাত্রী মঞ্জু মালেদের অভিযোগ, ‘‘এত সুন্দর একটি পার্কের এমন করুণ দশা হবে না দেখলে বিশ্বাস হয় না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্কের এক কর্মী বলেন, “গত বছর প্রায় পার্ক থেকে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা আয় হয়েছিল। যদিও পার্কের মানোন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘চাহিদা থাকলেও নতুন নৌকো কেনা হয়নি। পাখিরালয়টিও নিয়মিত সাফাই হয় না। রাতে এলাকায় মদ-জুয়ার আসর বসে। অথচ পার্কের প্রাচীর সংস্কারের বিষয়ে উদাসীন আধিকারিকরা।”
দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপস কারকের দাবি, “পার্কে অসামাজিক কাজের অভিযোগ মিথ্যা। রাতে পার্কে পাহারার ব্যবস্থা রয়েছে। নৌকোর সংখ্যাও বাড়ানো হবে।” বন দফতরের ডিএফও (মেদিনীপুর) রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “সেন্ট্রাল জু অথরিটির অনুমতি না থাকায় পার্কে এখন হরিণ নেই। ট্রয় ট্রেনের কাজ চালুর বিষয়ে খড়্গপুর আইআইটি-র সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত ট্রয় ট্রেনের কাজ চালু হবে। এ ছাড়াও পার্কটির মান বাড়াতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy