Advertisement
০২ জুন ২০২৪

গলিতে ঢোকে না কম্প্যাক্টর, জমছে জঞ্জাল

পথের পাশে জঞ্জালের পাহাড়। প্রতিদিন ঠিকমতো সাফাই হয় না। দুর্গন্ধে চলা দায় মেদিনীপুরের রাস্তায়। অথচ আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণে আইন রয়েছে। এসেছে আধুনিক যন্ত্র কম্প্যাক্টর। তারপরেও কেন এই হাল জেলার সদর শহরের— খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ শেষ কিস্তি।এক দিকে পুরসভার অনিয়মিত জঞ্জাল সাফাই, অন্য দিকে রাস্তার ধারে আবর্জনা ফেলার অভ্যাস। জোড়া ফলায় পথচলা দায় শহর মেদিনীপুরে। তবে যে জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য পুরসভায় দু’টি কম্প্যাক্টর যন্ত্র এসেছে! তা-ও কেন এই হাল?

কম্প্যাক্টর নেমেছে সার্কিটহাউস মোড়ে (বাঁ দিকে)। খাপ্রেলবাজারের রাস্তায় হামেশাই দেখা যায় জঞ্জালের পাহাড় (ডান দিকে)। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

কম্প্যাক্টর নেমেছে সার্কিটহাউস মোড়ে (বাঁ দিকে)। খাপ্রেলবাজারের রাস্তায় হামেশাই দেখা যায় জঞ্জালের পাহাড় (ডান দিকে)। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

সুমন ঘোষ
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

এক দিকে পুরসভার অনিয়মিত জঞ্জাল সাফাই, অন্য দিকে রাস্তার ধারে আবর্জনা ফেলার অভ্যাস। জোড়া ফলায় পথচলা দায় শহর মেদিনীপুরে।

তবে যে জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য পুরসভায় দু’টি কম্প্যাক্টর যন্ত্র এসেছে! তা-ও কেন এই হাল?

জবাবে পুর-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, কম্প্যাক্টর যন্ত্র আকারে বড় হওয়ায় শহরের গলিপথ দূর, ছোট রাস্তাতেও ঢুকছে না। ফলে, বড় রাস্তার ধারে থাকা ভ্যাট থেকে আবর্জনা তোলাটুকুই শুধু হচ্ছে। নিয়মমতো শহরের অলিগলিতে থাকা ভ্যাট থেকে আবর্জনা তুলে ফেলার কথা সুভাষনগর, সার্কিট হাউস, অরোরা সিনেমা হলের সামনে থাকা বড় ভ্যাটগুলিতে। সেখান থেকে আবর্জনা তুলে নিয়ে যাবে কম্প্যাক্টর। কিন্তু ছোট ভ্যাট নিয়মিত সাফাই হয় না বলে অভিযোগ। ফলে, কম্প্যাক্টর গলিতে না ঢোকায় পথ চলা দায় হয়ে দাঁড়ায়। অনেক ক্ষেত্রে নিকাশি নালার উপর রয়েছে ভ্যাট। ফলে, ভোগান্তি আরও বেশি। নতুনবাজার এলাকার বাসিন্দা শক্তিপদ খাঁড়ার কথায়, “পথ চলতে গিয়ে বিপদ হয়। একে দুর্গন্ধে টেকা দায়। তার উপর ভ্যাট উপচে আবর্জনা নিকাশি নালা বন্ধ করে দেয়। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না।’’

পুরকর্তৃপক্ষও স্বীকার করে নিচ্ছেন, ভ্যাটে আবর্জনা ফেলার পদ্ধতি তুলে দেওয়া প্রয়োজন। উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের কথায়, “আমরা চাইছি নতুন করে ভ্যাট না বসাতে। কারও বাড়ির সামনে ভ্যাট হলে তিনি বাধা দেন। নিয়মিত তা পরিষ্কারের ক্ষেত্রেও ঘাটতি থাকে।’’ শহরবাসীর সচেতনতার খামতি রয়েছে বলেও উপপ্রধানের অভিযোগ। তাঁর দাবি, সাফাইকর্মীরা গাড়ি নিয়ে বাড়ির সামনে গিয়ে বাঁশি বাজালেও অনেকে গাড়িতে আবর্জনা দেন না। পরে লুকিয়ে রাস্তায় ফেলেন।

আবার উল্টোটাও ঘটে। জঞ্জাল সাফাইয়ের গাড়ি সব জায়গায় নিয়মিত যায় না। আবার পুর-এলাকার সর্বত্র এই পদ্ধতি চালুও নেই। ফলে, রাস্তার ধারে জঞ্জালের পাহাড়ের ছবি এই শহরে বড্ড চেনা। কামারআড়া, সিপাইবাজার, নতুনবাজার হোক বা মানিকপুর— সর্বত্র এমনটা দেখা যায়। শহরের বাসিন্দা গোপাল দাসের কথায়, ‘‘বাড়ি বাড়ি বালতি দিলে এই সমস্যা থাকে না। সাফাইকর্মীরা বালতি থেকে গাড়িতে আবর্জনা তুলে নিতে পারেন। শুধু আবর্জনা বোঝাই বালতি দরজার সামনে রাখলেই হল। পুরসভার উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।’’

কিন্তু কবে পুরসভা সে পথে হাঁটবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত কোনও আশ্বাস মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

compactor gerbage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE