বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে ঝুলছে ক্যালেন্ডার। তমলুকে পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।
ক্যালেন্ডারের কোণে লেখা ‘এগিয়ে বাংলা’, মাঝে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর পুরো ক্যালেন্ডার জুড়ে সরকারি প্রকল্পের কথা। ইংরেজি নতুন বছরে এমনই একটি ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে তৃণমূলের প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন। আর সেই ক্যালেন্ডারই শোভা পাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন হাইস্কুলে। এমনকি খোদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের ভিতরেও ঝুলছে ওই ক্যালেন্ডার!
রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত একটি শিক্ষক সংগঠনের তরফে সরকারি প্রকল্পের প্রচারমূলক ওই ক্যালেন্ডার বিলি ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে পূর্ব মেদিনীপুরে। এমন ক্যালেন্ডার হাইস্কুল ও শিক্ষা দফতরের অফিসে টাঙানোয় নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি।
জেলা শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স এসোসিয়েশনের তরফে চলতি ইংরেজি বছরে একটি ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছে। ওই ক্যালেন্ডারের উপরের দিকে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের একটি প্রশাসনিক সভা মঞ্চের ছবি। ছবিতে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও রয়েছে তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী, ভগবানপুরের বিদায়ী বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি প্রমুখ। ওই ক্যালেন্ডারে বড় হরফে উল্লেখ রয়েছে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের না । সম্প্রতি ওই শিক্ষক সংগঠনের তরফে প্রকাশিত ওই ক্যালেন্ডার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার হাইস্কুলে পৌঁছে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। এ ভাবে একটি শিক্ষক সংগঠনের তরফে এমন ক্যালেন্ডার নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ জানায় সিপিএম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)।
সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক বিকাশ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘কোনও শিক্ষক সংগঠনের প্রকাশিত ক্যালেন্ডার সরকারি দফতর বা কোন স্কুলে টাঙানো সরকারি নিয়ম বিরুদ্ধ। এবিষয়ে আমরা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এইভাবে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধ হোক।’’ ঘটনার কথা স্বীকার করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স এসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি অনুপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত জানুয়ারি মাসে ওই ক্যালেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। তখন নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সরকারি অফিস ও স্কুলে যেখানে ওই ক্যালেন্ডার লাগানো আছে সংগঠনগতভাবে তা সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছি।’’
যদিও বুধবার দুপুরেও জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসের ভিতরে ওই ক্যালেন্ডার দেখা গিয়েছে। ওই ক্যালেন্ডার থাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতির উত্তর, ‘‘আমি এখন আদালতের মামলার কাজে ব্যস্ত রয়েছি।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি। এরকম ঘটনা হলে নির্বাচনী বিধি মেনে তা সরিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy