Advertisement
০৪ মে ২০২৪
খড়্গপুর কলেজ

ভর্তির নামে টাকা, পুলিশে নালিশ জানাবেন কর্তৃপক্ষ

কলেজে ভর্তির জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে এ বার পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন খ়ড়্গপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই নেতার বিরুদ্ধে হিন্দি অর্নাস বিভাগে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেন অক্ষয় সোনকার নামে এক ছাত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০০:৪৪
Share: Save:

কলেজে ভর্তির জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে এ বার পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন খ়ড়্গপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই নেতার বিরুদ্ধে হিন্দি অর্নাস বিভাগে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেন অক্ষয় সোনকার নামে এক ছাত্র। অভিযোগ নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার বৈঠক ডাকেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ সূত্রে খবর, আলোচনায় অভিযোগকারী ছাত্রের বক্তব্যে কিছু অসঙ্গতি মেলায় এ বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চালু হয়েছে অনলাইনে আবেদন। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলিতেও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। এরমধ্যেই গত শনিবার খড়্গপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৌশিক রায়ের কাছে টিএমসিপির কলেজ শাখার কার্যকরী সভাপতি শেখ জামির ও ছাত্রনেতা হায়দার আলি খানের বিরুদ্ধে ভর্তির নামে ৮ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ জানান অক্ষয়। অভিযোগ নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার দুপুরে কলেজ পরিচালন সমিতির ছ’জন প্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক ডাকেন কর্তৃপক্ষ।

এ দিনের বৈঠকে পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত দু’জন প্রতিনিধির মধ্যে নারায়ণ পড়িয়া উপস্থিত ছিলেন। সমিতির অপর সরকার মনোনীত প্রতিনিধি তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বৈঠকে আসেননি। যদিও টেলিফোনে তিনি নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে খবর।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বৈঠকে অক্ষয়ের কাছে গোটা বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। সেই সময় ওই ছাত্র দাবি করেন, তাঁর ও তাঁর এক বন্ধুর ভর্তির জন্য তিনি চার হাজার টাকা করে মোট আট হাজার টাকা দিয়েছিলেন। যদিও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে করা অভিযোগে অক্ষয় জানিয়েছেন, ভর্তির জন্যই তিনি ওই টাকা দিয়েছেন। এ দিনের অক্ষয়ের বক্তব্য ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়ায় তদন্তের জন্য পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অভিযুক্ত টিএমসিপির নেতাদের মধ্যে হায়দার কলেজের ছাত্র নন। তাই এ দিনের বৈঠকে তাঁকে কলেজে আসতেও নিষেধ করা হয়।

এ দিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৌশিক ঘোষ বলেন, “বৈঠকে অভিযোগকারী ছাত্রের কথায় কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ায় আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাব বলে ঠিক করেছি। অভিযুক্ত ছাত্রদের মধ্যে হায়দার আলি খান কলেজের ছাত্র নন। তাই তাঁকে কলেজ চত্বরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে।”

ঘটনার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। যদিও এ দিনও অভিযোগ অস্বীকার করেন টিএমসিপি-র প্রাক্তন শহর সহ-সভাপতি হায়দার আলি খান। তাঁর দাবি, “ওই ছাত্রের অভিযোগ ভুয়ো। ওকে ভুল বুঝিয়ে রাজা সরকার এই কাজ করিয়েছে।’’ হায়দারের আরও অভিযোগ, ‘‘আমাকে ফাঁসাতে রাজা সরকার এই চক্রান্ত করেছে। কলেজের বৈঠকে ওই ছাত্রের
কথায় তাই অসঙ্গতি ছিল। আর আমার কলেজে ঢোকার বিষয়ে
কলেজ কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা মেনে চলব।”

খড়্গপুর কলেজে টিএমসিপির প্রাক্তন শহর সভাপতি রাজা সরকার ও প্রাক্তন শহর সহ-সভাপতি হায়দার আলি খানের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। গত বছর টিএমসিপির শহর কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। সংগঠনের নতুন জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী দায়িত্ব নেওয়ার পরে কলেজের শাখা কমিটি গড়া হয়। যে দু’জনের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ, তাঁরা দেবলীনা-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।

এ নিয়ে টিএমসিপির প্রাক্তন শহর সভাপতি রাজা সরকার বলেন, “কেউ নিজে বাঁচার জন্য আমার নাম নিতেই পারে। তবে এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ওই ছাত্র অভিযোগ করার পরে আমি জেনেছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অভিযোগের সঠিক তদন্ত হলে নিশ্চয় সত্যিটা সামনে আসবে। আমার বিশ্বাস, পুলিশ সঠিক ভাবে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

corruption admission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE