উদ্বোধনের আগেই ফাটল নতুন সেতুতে।
আজ, বৃহস্পতিবার জামবনির প্রশাসনিক সভাস্থল থেকে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সেতুর উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার একদিন আগে বুধবারই ওই সেতুর সঙ্গে মূল রাস্তার সংযোগস্থলে ফাটল চোখে পড়ে।
বিষয়টি চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় প্রশাসনিক মহলে। ছুটে আসেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থলে যান ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি। পূর্ত দফতরের নিবার্হী বাস্তুকার (মেদিনীপুর বিভাগ) প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, “ফাটল নয়, কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট (অর্থাৎ রাস্তা এবং সেতুর ঢালাই অংশের সংযোগস্থল)। মূল সেতুর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।” যদিও পূর্ত দফতরের কর্তারাই মানছেন, ফাটলটি যথেষ্ট বড়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা ভরাট করে দেওয়া হবে।
সূত্রের খবর, বুধবার এক বাস চালকের নজরে আসে ফাটলটি। সেতুর দু’পাশেই ওই ফাটল ধরছে। পূর্ত দফতরের ব্যাখ্যায় বিষয়টি তেমন উদ্বেগের নয়। সেতুর দু’পাশে সংযোগকারী রাস্তা তৈরির সময় মাটি দিয়ে উঁচু করা হয়েছিল। তারপর ঢালাই করা হয়। মূল সেতুটি ঢালাই হয়েছিল আলাদা ভাবে। সেতু তৈরির এমনই নিয়ম। তার ফলেই ফাটল দেখা দিয়েছে সংযোগস্থলে। আপাতত স্টোন চিপস দিয়ে ওই ফাটল ভরাট করে দেওয়া হবে।
বর্ষায় প্রতি বছরই জল জমে যায় ঘাটাল শহর সংলগ্ন দু’নম্বর চাতালে (কজওয়ে)। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্যই ২০১৩ সালে ওই রাস্তার উপর সেতুর তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রথমে ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। পরে বরাদ্দ আরও বাড়ে। আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে নির্মাণ কাজ। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই গত অগস্টে যান চলাচল শুরু হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছিলেন বাসিন্দারা। কাজও চলেছে ঢিমেতালে। কিন্তু অভিযোগ, শেষের দিকে তড়িঘড়ি কাজ শেষ করতে গিয়েই বিপত্তি বাধিয়েছি পূর্ত দফতর। যদিও নির্মাণকারী সংস্থার পক্ষে অভীক রায় বলেন, “আমরা নিয়ম মেনেই সেতু তৈরি করেছি। ফাটলের বিষয়টি শুনেছি। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “পূর্ত দফতরকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। এখনই কোনও মন্তব্য করব না।”