অচল ডিসপ্লে বোর্ডের উপর টাঙানো হয়েছে ফ্লেক্স। ট্রেনের সময় জানতে আপাতত ভরসা এটুকুই। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
একটি স্টেশন। সমস্যা হাজার। সুরাহাও নেই।
ফলে নেই রাজ্যের মেদিনীপুর স্টেশনে হয়রানির শিকার নিত্যযাত্রীরা। ট্রেন নেই, নেই মহিলা বা বয়স্কদের জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা। টাইম টেবিলের একটি বৈদ্যুতিন বোর্ড ছিল, আপাতত সেটিও খারাপ। মেরামতিতে নজর নেই কারও। কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি নানা দাবি দাওয়া নিয়ে ফের খড়্গপুর ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের কাছে তদ্বির করেছে মেদিনীপুর-হাওড়া নিত্যযাত্রীদের সংগঠন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু পাল বলেন, “এ বার ডিআরএম সমস্যা সমাধানের জন্য আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও আশাবাদী, শীঘ্রই সুরাহা মিলবে।” ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা বলেন, “সমস্যাগুলির কথা শুনেছি। প্রতিটি বিষয়েই ইতিবাচক পদক্ষেপ করার জন্য উদ্যোগী হব।”
আগে মেদিনীপুর স্টেশনে ডিসপ্লে বোর্ড ছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন হল সেটি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। ব্যবসার কারণে নিয়মিত কলকাতা যান রাজাবাজারের অজয় কারক। তাঁর কথায়, “কোন ট্রেন কখন আসবে, কখন ছাড়বে জানা যেত আগে ডিসপ্লে বোর্ড থেকেই সব জানা যেত। এখন সেটি খারাপ। অনুসন্ধান অফিসে গিয়ে জেনে আসতে হয়। কিন্তু সেখানেও তো কর্মীরা থাকেন না।”
মোট চারটি টিকিট কাউন্টার রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে মহিলা বা বয়স্কদের জন্য কোনও কাউন্টার নেই। ফলে অন্যদের সঙ্গে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েই তাঁদের টিকিট কাটতে হয়। ভিড়ে দাঁড়িয়েটিকিট কেটে দৌড়ে গিয়ে ট্রেনে ওঠা সম্ভব হয় না বয়স্কদের পক্ষে। রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা মৌটুসি রায়ের কথায়, “আমি গান শেখার জন্য সপ্তাহে একদিন করে বিষ্ণুপুর যাই। টিকিট কাটার জন্য অনেক আগে স্টেশনে পৌঁছতে হয়। মেয়েদের জন্য একটি আলাদা টিকিট কাউন্টার হলে ভাল হয়।” সে দাবিও জানিয়েছেন যাত্রী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, অবস্থা এমনই খারাপ যে টিকিটকাটার পর বোঝা যায় না তার উপর কী লেখা রয়েছে। তাঁতিগেড়িয়ার দিকে আরও একটি উড়ালপুল তৈরির দাবিও রয়েছে যাত্রীদের। অভিযোগ, তাঁতিগেড়িয়ার দিক থেকে যাঁরা নামেন তাঁদের অনেকটা পথ হেঁটে এসে যাতায়াত করতে হয়। নিত্যযাত্রী কাকলি পাল বলেন, “তাঁতিগেড়িয়ার দিকেও একটি উড়ালপুল না থাকায় সামনের কামরায় উঠলে অসুবিধেয় পড়তে হয়। অনেকটা হাঁটা। কিন্তু আর একটি উড়ালপুল থাকলে এতটা হাঁটতে হত না।”
এ সবের পাশাপাশি দিঘা যাওয়ার নতুন ট্রেন চালুরও দাবি জানানো হয়েছে। বাঁকুড়ার দিকে যাওয়ার ব্যবস্থা ভাল নয় বলে সংগঠনের দাবি। গড়বেতা থেকে সকাল ৫.৪৫ মিনিটে হাতিয়া যাওয়ার একটি ট্রেন ছাড়ে। ওই ট্রেনটি যাতে মেদিনীপুর থেকে সকালে ছাড়া হয় সেই দাবিও রয়েছে যাত্রীদের। যদিও দীর্ঘদিনের এই সব দাবি নিয়ে রেল বিন্দুমাত্র উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। এ বার অবশ্য ডিআরএম পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy