Advertisement
১৬ মে ২০২৪

জাঁক কমছে হালখাতার, কোপ বাংলা ক্যালেন্ডারে

বাংলা নববর্ষ মানেই হালখাতা আর দোকানে দোকানে ক্রেতাদের মিষ্টির প্যাকেট আর বাংলা ক্যালেন্ডার বিলি। এ বার অবশ্য ক্যালেন্ডারের চাহিদা কম। ক’দিন বাদেই পয়লা বৈশাখ। অথচ ক্যালেন্ডার যাঁরা বানান, তাঁদের কাছে বাংলা ক্যালেন্ডার তৈরির তেমন বরাতই আসেনি।

মন্দা: সামান্য বরাত। সেই মতো চলছে ক্যালেন্ডার তৈরি। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র

মন্দা: সামান্য বরাত। সেই মতো চলছে ক্যালেন্ডার তৈরি। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০০:২৬
Share: Save:

বাংলা নববর্ষ মানেই হালখাতা আর দোকানে দোকানে ক্রেতাদের মিষ্টির প্যাকেট আর বাংলা ক্যালেন্ডার বিলি। এ বার অবশ্য ক্যালেন্ডারের চাহিদা কম। ক’দিন বাদেই পয়লা বৈশাখ। অথচ ক্যালেন্ডার যাঁরা বানান, তাঁদের কাছে বাংলা ক্যালেন্ডার তৈরির তেমন বরাতই আসেনি।

মেদিনীপুরের মিঞাবাজারের ব্যবসায়ী শেখ জাহাঙ্গির ২০০৩ সাল থেকে ক্যালেন্ডার তৈরির কারবার করছেন। এত দিন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা তাঁর কাছে বাংলা ক্যালেন্ডারের তৈরির বরাত দিতেন। দেড় লক্ষেরও বেশি ক্যালেন্ডার ছাপা হত জাহাঙ্গিরের কারখানায়। সেখানে এ বছর মাত্র ৫০ হাজার ক্যালেন্ডারের তৈরির বরাত পেয়েছেন তিনি।

এই পরিস্থিতির জন্য ক্যালেন্ডার তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা নোট বাতিলের ঘটনাকে দায়ী করছেন। জাহাঙ্গির বলছিলেন, ‘‘নোট বাতিলের ফলে গ্রামাঞ্চলের ছোট ব্যবসায়ীদের লোকসানের বহর বেড়েছে। তাই তাঁরা আর নববর্ষে ক্রেতাদের ক্যালেন্ডার দিয়ে খরচ বা়ড়াতে চাইছেন না।’’ ক্যালেন্ডার তৈরির বরাত কমে যাওয়ায় জাহাঙ্গিরের কারখানায় কর্মী সংখ্যাও কমেছে। আগে যেখানে ১৫ জনে কাজ করতেন, এ বার সেখানে ক্যালেন্ডার বানাচ্ছেন মাত্র ৫ জন। তা ছাড়া, গত দু’বছর আলু বিক্রি করে তেমন লাভ পাননি চাষিরা। এতে পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামীণ অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে। তাই হালখাতার জাঁক এ বার কম।

মেদিনীপুর বড়বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী পারব কালিও মানছেন, ‘‘নোট বাতিলের পরে বাজার ভাল জমেনি। তাই সব বিষয়েই খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছি। হালখাতার বাজেটও কম ধরা হয়েছে। আগে অনেককে ২-৩টে ক্যালেন্ডারও দিয়েছি। কিন্তু এ বার তা হবে না।’’ গড়বেতার আমলাগোড়ায় স্টেশনারি দোকান আছে সুপ্রিয় দে-র। তিনিও বললেন, ‘‘ব্যবসায় মন্দা। তাই নববর্ষে শুধু মিষ্টির প্যাকেট দেব। ক্যালেন্ডারের বরাত দিইনি।’’

মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগরের আর এক ক্যালেন্ডার প্রস্তুতকারী ব্যবসায়ী মহম্মদ আবু বকরও বললেন, ‘‘বাংলা ক্যালেন্ডারের চাহিদা এ বার ৫০ শতাংশ কমেছে। আমিও ভাবছি কী ভাবে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ডিজিট্যালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্যালেন্ডার তৈরি করা যায়। নতুন কিছু না করতে পারলে ক্যালেন্ডার তৈরি বন্ধ হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pohela Boishakh Calendar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE