Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Kharagpur

অভিষেক ফিরতেই পাট্টার তোড়জোড়, নিয়মে প্রশ্ন

রবিবার ছুটির দিনেই খড়্গপুর-১ ব্লকের বড়কোলা পঞ্চায়েতের মাতকাতপুরে পৌঁছন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

মাতকাতপুরে চলছে পাট্টার আবেদন সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র

মাতকাতপুরে চলছে পাট্টার আবেদন সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:১৬
Share: Save:

সেচের জমিতে বসবাসকারী পরিবারর পাট্টার দাবি দীর্ঘ কয়েক দশকের। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সেই দাবি জানাতেই পরিস্থিতি বদলাল। অভিষেক জেলা ছাড়ার চব্বিশ ঘন্টা না পেরোতেই মাতকাতপুরে পাট্টা দিতে শুরু হল প্রশাসনিক তৎপরতা।

রবিবার ছুটির দিনেই খড়্গপুর-১ ব্লকের বড়কোলা পঞ্চায়েতের মাতকাতপুরে পৌঁছন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এলাকায় যান মহকুমার ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শান্তনু সরকার থেকে বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তী। প্রতিটি পরিবার থেকে পাট্টার জন্য আবেদন সংগ্রহ করা হয়। বিডিও বলেন, “গ্রামবাসী পাট্টার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতে জেলাশাসকের নির্দেশে আমরা এসে আবেদন সংগ্রহ করছি। এখানে সেচের জমিতে পাট্টা দেওয়ার যে প্রক্রিয়া রয়েছে তা মিটিয়েই পাট্টা দেওয়া যাবে।” মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কথায়, “আগে সেচের ওই জমি খাস করতে হবে। এ দিন সব মিলিয়ে ২৫০টি আবেদন জমা পড়েছে।”

শনিবার দুপুরে কাঁসাই নদীর পাড়ে এই গ্রামেই পৌঁছেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যও বিজেপির। তবে গ্রামবাসীর দীর্ঘ দিনের পাট্টার দাবি মেটেনি। গত ডিসেম্বরে পাট্টা চেয়ে জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের সর্বস্তরে দাবিপত্র জমা দিয়েও সুরাহা হয়নি। তাই অভিষেককে কাছে পেতেই সেচের জমিতে বসবাসকারীরা পাট্টার দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, সেচের জমিতে বসবাস করায় আবাস যোজনার বাড়ি মিলছে না। অথচ পঞ্চায়েতের কর, বিদ্যুতের বিল দিতে হচ্ছে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিয়ম অনুযায়ী সেচ দফতরের জমিতে সরাসরি পাট্টা দেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে সেচের জমি খাস করে জেলা কালেক্টরেটের খতিয়ানে আনতে হবে। তার পরে ব্লকের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির সিদ্ধান্তক্রমে মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ও মহকুমাশাসকের অনুমোদন লাগবে। তার পরেই জমির পাট্টা দেওয়া যাবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় গ্রামবাসী খুশি। স্থানীয় নিরঞ্জন রায়, নমিতা সাউরা বলছেন, “সব সম্ভব হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামে এসেছিলেন বলে। আমরা তো বহু বছর ধরে পাট্টার দাবি জানাচ্ছিলাম। কিন্তু উনি গ্রামে আসার পরে যে ভাবে রবিবার ছুটির দিনে বিডিও, ভূমি আধিকারিকরা এসে আবেদন নিলেন, তাতে আমাদের আশা আরও বেড়ে গেল।” তৃণমূলের বুথ সভাপতি চন্দন রায়ের মতে, “এই জয় আমাদের সকলের জয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবশ্যই এর সুফল পাব।”

বিজেপি অবশ্য পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মাতকাতপুর সংসদ তাদের দখলে বলেই দীর্ঘ দিনের দাবিতে প্রশাসন গুরুত্ব দেয়নি। এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসায় দেখনদারির তৎপরতা হচ্ছে। বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস প্রশ্ন তুলেছেন, “সেচের জমিতে পাট্টা দেওয়ার কথা কী ভাবে বলতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? এতেই বোঝা যাচ্ছে নিয়ম মেনে প্রশাসন চলছে না। চলছে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি তৃণমূলের কথায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kharagpur Patta Abhishek Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE