Advertisement
০৯ মে ২০২৪

ভাসাবে না তো ভাঙন, আতঙ্কে রাত জাগছে এড়িয়াখালি

বর্ষার আগে ভাঙন বিধ্বস্ত নদী বাঁধের কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সুতাহাটার এড়িয়াখালির গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, রায়ত জমি, বাড়ি একে একে গ্রাস করছে বর্ষায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হুগলি নদী।

ভাঙছে নদীর পাড়। —নিজস্ব চিত্র।

ভাঙছে নদীর পাড়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৪
Share: Save:

বর্ষার আগে ভাঙন বিধ্বস্ত নদী বাঁধের কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সুতাহাটার এড়িয়াখালির গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, রায়ত জমি, বাড়ি একে একে গ্রাস করছে বর্ষায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হুগলি নদী। পুরোপুরি বর্ষা নামার আগে বাঁধ সারাই না হলে জল ঢুকে এলাকা ভেসে যাওয়ার আশঙ্কাও জানিয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুতাহাটার এড়িয়াখালির গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলছে হুগলি নদী। নদীপাড়ের অবস্থা বরাবরই খারাপ। বাঁশ আর পাথর দিয়ে কোনওমতে দাঁড় করানো হয়েছিল। সামান্য বৃষ্টি হলে মাটি ধুয়ে চলে যেত নদীর গর্ভে। পড়ে থাকত বাঁধের খাঁচাটুকু। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ শুনে বাঁধ সারাইয়ের আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রশাসনিক কর্তারা। সেই মতো ২০১৩ সালে জেলা পরিষদ কাজও করেছিল কিছুটা। সেই সময় মাটি ফেলে ভিত উঁচু করে মাটির বাঁধ করে কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি তা টের পাওয়া গিয়েছিল পরের বর্ষাতেই। আর ২০১৬ সালে দাঁড়িয়ে পড়ে রয়েছে বাঁধের কঙ্কালটুকুই।

গ্রামের বাসিন্দা হারাধন দাস, বিজয় দাসদের কথায়, ‘‘কয়েক বছরের মধ্যে প্রায় ৬০-৭০ বিঘা রায়ত জমি নদী কেড়ে নিয়েছে। নদীবাঁধ কোথাও তিন ফুট কোথাও চার ফুট টিকে রয়েছে। বাঁধের তলায় ৮-১০ ফুট গভীর গর্ত হয়ে গিয়েছে। এ বার আবার কী ক্ষতি হবে জানি না। রাতে ঘুম হয় না রাতে!’’ তাহলে তিন বছর আগে এমন কী কাজ হল, যা কোনও উপকারে এল না?

চলছে দায় এড়ানোর খেলা। প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য আনন্দময় অধিকারী ভাঙনের জন্য সেচ দফতরকে দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘২০১৩ সালে আমি যখন জেলা পরিষদে ছিলাম তখন বাঁধ মেরামতির জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলাম। সেচ দফতর ঠিকভাবে কাজ করেনি।’’ আর তমলুকের সেচ দফতরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কল্পতরু পালের দাবি, ‘‘বাঁধ মেরামতির দায়িত্ব জেলা পরিষদের। সেচ দফতরের নয়। সেচ দফতর কারিগরি সহায়তা করে।’’

সুতাহাটার বিডিও শুভেন্দু রায় বলেন, ‘‘ভাঙনের ফলে কুঁকড়াহাটির এরিয়াখালি শিবমন্দির থেকে ইটভাটা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নদীবাঁধের সমস্যার কথা শুনেছি। বাঁধের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরকে পাঠানো হয়েছে।’’ হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের দাবি, ‘‘এরিয়াখালি নদীবাঁধের অবস্থা বিপদজ্জনক। বিষয়টি নিয়ে সেচমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River bank Dwellers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE