Advertisement
০৫ মে ২০২৪

চাষিদের নতুন চেক দেবে অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম

জট কাটার ইঙ্গিত দিল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম (ইসিএসসি)। ধান বিক্রির করে টাকা না পাওয়া চাষিদের নতুন করে চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৃহস্পতিবার। জানা গিয়েছে আজ শুক্রবার থেকেই চাষিদের নতুন করে চেক দেওয়ার কাজ শুরু হবে। দিন কয়েক আগেই অভিযোগ উঠেছিল সহায়ক মূল্যে ধান কেনার পর ইসিএসসি যে চেক দিয়েছিল চাষিদের তা ‘বাউন্স’ হয়ে গিয়েছে। ধানের দাম পাওয়ার বদলে চাষিদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল চেক বাউন্স করার জন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০১:২৫
Share: Save:

জট কাটার ইঙ্গিত দিল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম (ইসিএসসি)। ধান বিক্রির করে টাকা না পাওয়া চাষিদের নতুন করে চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৃহস্পতিবার। জানা গিয়েছে আজ শুক্রবার থেকেই চাষিদের নতুন করে চেক দেওয়ার কাজ শুরু হবে।

দিন কয়েক আগেই অভিযোগ উঠেছিল সহায়ক মূল্যে ধান কেনার পর ইসিএসসি যে চেক দিয়েছিল চাষিদের তা ‘বাউন্স’ হয়ে গিয়েছে। ধানের দাম পাওয়ার বদলে চাষিদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল চেক বাউন্স করার জন্য। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি পদস্থ আধিকারিক পাঠিয়ে সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হয় নিগম।

বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এসেছিলেন ইসিএসসি-র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সুনয় গোস্বামী। চাষি, চালকল মালিক, জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পর নতুন করে চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সুনয়বাবু বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকেই নতুন করে চেক দেওয়া হবে। প্রতিটি চাষি চেক না পাওয়া পর্যন্ত কাজ চলবে।”

তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষেত্রে তিন জনকে এই মুহূর্তে চেক দেওয়া হবে না বলে। যদিও তদন্তে সকলেই চাষি বলে প্রমাণ হয়েছে। তবে ওই তিন জনের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু গোলমাল রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে চাষির দেখা মেলেনি। আর একটি ক্ষেত্রে চাষি দু’টি চালকলে ধান বিক্রি করেছিলেন।

তবে পুরো বিষয়টিই তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতে এমনটা হতেই পারে যেদিন তদন্তকারী দল ওই গ্রামে গিয়েছিলেন সে দিন সংশ্লিষ্ট চাষি বাড়িতে ছিলেন না। তাই আরও একবার তদন্ত করে দেখা হবে। আর যে চাষি দু’টি চালকলে চাল বিক্রি করেছিলেন তার ক্ষেত্রে দেখা হবে তাঁর জমি কতটা। কারণ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন চাষি একর প্রতি ২৭-৩০ কুইন্টাল ধান সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতে পারেন। তবেই জেলার সমস্ত চাষিকে সুযোগ দেওয়া যাবে। ওই চাষির জমির সঙ্গে ধান বিক্রির এই হার মিলে গেলে তাঁকেও চেক দিয়ে দেওয়া হবে।

কিন্তু আশঙ্কা যাচ্ছে না চাষিদের মন থেকে। এর আগেই তাঁরা জানিয়েছিলেন এ বারের চেকও যদি ‘বাউন্স’ করে। তার উপর রয়েছে আরও প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই যে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে তা ফেরত পাওয়া যাবে কী ভাবে?

ইসিএসসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কোন চাষির কত টাকা কেটে নিয়েছে তার নথি জমা দিয়ে টাকা ফেরতের আবেদন করা যাবে। চেক দেওয়ার সময় ব্যাঙ্কের পাশ বইয়ের জেরক্স (টাকা কেটে নেওয়া অংশের) জমা দিয়ে আবেদন করলে পরে তাঁদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা জমাও দিয়ে দেওয়া হবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো বাঁকুড়া, বীরভূম ও হুগলি জেলাতেও একই ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও এই পদ্ধতিতেই নতুন করে চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইসিএসসি জানিয়েছে। যে সব ক্ষেত্রে কিছু গরমিলের আশঙ্কা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ফের নথি মেলানো হবে। গরমিল না পাওয়া গেলে নতুন চেক দিয়ে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জন্য ইসিএসসি জেলায় ২০টি শিবির করে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ধান কেনা শুরু হয়। ৯ মার্চ তা বন্ধ হয়। ধান কেনার সঙ্গে সঙ্গেই চাষিদের হাতে চেকও দিয়ে দেওয়া হয়। এই সময় অভিযোগ ওঠে, প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হয়নি। ৪ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত যে ধান কেনা হয়েছে তার বেশিরভাগই বিক্রি করেছেন ফোড়েরা। ফলে ওই সময়ে ধান বিক্রি করা চাষিদের চেক দেওয়া হলেও টাকা আটকে দেওয়া হয়। ফলে চেক বাউন্স হয়ে যায়। জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরে চাষিরা বিক্ষোভ দেখান। ওই ক’দিনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় সাড়ে ৯০০ কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছিল। তারপরই দ্রুত নতুন করে চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE