সিভিক ভলিন্টিয়ার খুনে ধৃতেরা। রয়েছেন জেলা সুপার ভারতী ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
পুলিশে চাকরির লোভ দেখিয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত বনকর্মীর থেকে দেড় লক্ষ টাকা নিয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ার অমিত মাহাতো। চাকরি তো মেলেইনি, উল্টে টাকা চেয়ে ফেরত না পেয়ে অমিতকে খুনের পরিকল্পনা করে ওই বনকর্মী। পরিকল্পনা মাফিক শুক্রবার রাতে অমিতকে তমাল নদীর চরে ডেকে খুন করা হয়। প্রমাণ লোপাট করতে অমিতের সঙ্গী সৌরভ মাহাতোকেও খুন করে তারা। ঘটনায় শনিবার আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলছেন, “ব্যক্তিগত শত্রুতা ও প্রতিহিংসা থেকে পরিকল্পনা করেই এই খুন। যে সিম থেকে ফোন করে অমিতকে ডাকা হয়, সেই সিমটা একবারই ব্যবহার করা হয়। অমিতকে ফোন করে ডাকার পরে এই সিমটা ফেলে দেওয়া হয়।” তদন্ত নিয়ে এর বেশি কিছু বলতে চাননি ভারতীদেবী। এক তদন্তকারী অফিসারও মানছেন, “এ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তদন্ত এগিয়েছে।”
শনিবার সকালে গোয়ালতোড়ের পিংবনি থেকে এক কিলোমিটার দূরে তমাল নদীর চরে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার অমিত ও সৌরভের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ দিন রাতেই মূল অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বনকর্মী সনাতন মুর্মু, মিলন হেমব্রম, বিলাস টুডু, কার্তিক হাঁসদা, কুশল হাঁসদা, বাপন কিস্কু, নবীন মুর্মু, বিশ্বরূপ কালিন্দিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের রবিবার গড়বেতা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সনাতনই তাঁর দুই ছেলের পুলিশে চাকরি করে দেওয়ার জন্য বছর তিনেক আগে অমিতকে দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিল। এক ছেলেরও চাকরি না হওয়ায় মাস কয়েক আগে অমিতের থেকে দেড় লক্ষ টাকা ফেরত চায় সনাতন। অমিত সেই টাকা ফেরত দেয়নি। উল্টে সনাতনকে অপমান করে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, টাকা চেয়েও না মেলায় অমিতকে খুনের পরিকল্পনা করে সনাতন। খুনের পরিকল্পনার জন্য শুরুতে বিলাস, মিলন ও কার্তিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে। গত বৃহস্পতিবার রাতে খুনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয় বাপনের বাড়িতে। ওই দিনও বাপন ফোন করে অমিতকে তার বাড়িতে ডাকে। অমিত যায়ও। পরে ডিউটি আছে বলে বেরিয়ে যায়। শুক্রবার রাতে ফের অমিতকে ফোন করে বাপন। এ বার আর বাড়িতে নয়, ডাকা হয় ওই নদীর চরের কাছে।
সেই সময় পিংবনি মোড়ে পাহারায় ছিল সে। ফোন পেয়েই সহকর্মী সৌরভকে নিয়ে বাইকে সে চলে যায়। গিয়ে দেখে, নবীন, বিশ্বরূপ, কুশলও ওখানে রয়েছে। এরপরই কুড়ুল দিয়ে আঘাত করে অমিতকে খুন করা হয়। সৌরভ পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকেও খুন করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, যে সিম থেকে কল করে অমিতকে ডেকেছিল বাপন সেটি নন্দলাল টুডু নামে একজনের নামে রয়েছে। নন্দলালের বাড়ি বাঁকুড়ায়। ঘটনার পরে অমিতের মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখতে গিয়ে এই নম্বরটি নজরে আসে তদন্তকারীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy