ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক বেড়া দিয়ে এতদিন ঠেকিয়ে রাখা হতো জঙ্গলের হাতিদের। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা কাজ করছিল না বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ রেঞ্জের কাঠগোড়া গ্রামের ওই বৈদ্যুতিক বেড়ার খুঁটি দলমার দাঁতালেরা বেঁকিয়ে সদ্য রোয়া ধানজমি নষ্ট করে দিল। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, ওই তারের বেড়ায় ব্যাটারির চার্জ না থাকায় মঙ্গলবার রাতে গ্রামে ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে গিয়েছে প্রায় ৩৫টি হাতির দল।
প্রায় ৫০টি আদিবাসী পরিবারের বাস ওই গ্রামে। গ্রামবাসীর মধ্যে বাবলু সোরেন, বুধনি মান্ডি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘নামেই হাতি আটকাতে বৈদ্যুতিক তারের বেড়া দিয়েছে বন দফতর। ব্যাটারির যে চার্জ নেই নজর নেই। ফলে প্রায় ৩৫টি হাতি ওই তার ছিঁড়ে আমাদের গ্রামে বিঘের পর বিঘে রোয়া ধানের চারা নষ্ট করে দিয়ে গেল। এই অবস্থায় এ বার কী করব আমরা?’’
আদিবাসী অধ্যুষিত ওই গ্রামের বাসিন্দা সুমি মান্ডি বলেন, ‘‘মাঠ থেকে কখন হাতিরা বাড়িতে হামলা চালায় এই ভয়ে ছেলেপুলেদের নিয়ে সারা রাত ভয়ে কাটিয়েছি।’’ ধরমদাস মাণ্ডী জানান, অনেক দিন ধরেই ব্যাটারি খারাপ। ইনভার্টার কাজ করছে না। বন দফতরের কর্মী ও আধিকারিকদের জানিয়েও কাজ হয়নি। বুধবার ওই গ্রামের লোকজন অকেজো ব্যাটারি আর ইনভার্টার নিয়ে বাঁকাদহ রেঞ্জ অফিসে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান।
যদিও গ্রামবাসীকেই এর জন্য দায়ী করেছেন বন দফতরের কর্তারা। বিষ্ণুপুর পাঞ্চেতের ডিএফও অয়ন ঘোষের দাবি, ‘‘তারের বেড়ার ব্যাটারি খুলে ওই সব এলাকার কিছু লোকজন ক্লাবে টিভি চালান। ফলে এই অবস্থা হয়েছে।’’ তিনি জানান, সরকার হাতির হানা রুখতে এই পরিকল্পনা নিয়েছিল। লোকবলের অভাবে বন দফতরের নজরদারির অভাব রয়েছে। সেই সুযোগে কিছু লোকজন সেই উদ্যোগ ভেস্তে দিয়ে আখেরে নিজেদের সর্বনাশ করছেন। তাঁর আশ্বাস, চাষের ক্ষয়-ক্ষতির সাহায্য মিলবে। তিনি বলেন, ‘‘গোঁসাইপুর গ্রামের লোকজন নিজেরাই বৈদ্যুতিক তারের বেড়া দেখাশোনা করছেন। সে কারণে হাতি আটকাতে ওই বেড়া ভাল
কাজে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতেও বিষ্ণুপুরের বাসুদেবপুর বিট এলাকায় বেলশুলিয়া ও ত্রিবঙ্ক গ্রামে পটল জমিতে নেমে ব্যাপক ক্ষতি করেছে হাতির পাল। ক্ষোভে সে দিন বন দফতরের বাসুদেবপুর বিট অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন ওই এলাকার গ্রামবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy