বন দফতরের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, দলমার জঙ্গলে খাবার-পানীয় জলের সঙ্কট আর হাতির গতিপথে গ্রামবাসীর বাধা-এই ত্রহ্যস্পর্শেই পশ্চিম মেদিনীপুর ছেড়ে যেতে চাইছে না দলমার দাঁতাল বাহিনী।
বন দফতর সূত্রের খবর, গত বছর মার্চ মাসে ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে প্রায় ১২০টি হাতির পাল পশ্চিম মেদিনীপুরে ঢুকেছিল। গোটা বছরই ধরেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে হাতির পালটি। পালটি এখন একাধিক ভাগে ভাগ হয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছে জেলার একাধিক বনাঞ্চলে। জেলায় চারটি বন দফতরের বিভাগ রয়েছে। মূলত এখন পালটি রূপনারায়ণ এবং মেদিনীপুর বন বিভাগেই ঘোরাফেরা করছে। আর ৪০টি হাতি লালগড়ের জঙ্গলে রয়েছে। জেলার বন দফতরের এক কর্তা আপেক্ষের সুরেই বললেন, “আমরা রাতভর জেগে একাধিক বার পালের একটি অংশকে লালগড়ে ঢুকিয়ে ছিলাম। কিন্তু ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ পালটি দলমায় ফেরত পাঠানোয় উদ্যোগী হয়নি। দফতরের মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) নীরজ সিংঘল বলেন, “সমন্বয়ের অভাব ঠিক নয়। আসলে দলমায় ফিরে যেতে চাইছে না পালটি। খাবারের সমস্যা এর মূল কারণ। দ্রুত সব বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করা হবে যাতে পালটি দলমায় ফেরত পাঠানো যায়।”
এ দিকে সারা বছর ধরে জেলায় হাতির পাল লোকালয়ে ঢুকে ফসলের ক্ষতি করায় জঙ্গল ঘেঁষা মানুষের মধ্যেও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তাই হাতির পালকে যখন একটি নির্দিষ্ট রুটে লালগড়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়-তখনই গ্রামবাসীরা বাধা দেন। হুলা জ্বালিয়ে এবং পটকা ফাটিয়ে পথ আটকান। ফলে ফের ওই পথে না গিয়ে হাতির পাল ফিরে আসে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, “দফতরের তরফে বোঝানোর কোনও উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে একটা হযবরল অবস্থা।’’
বন দফতর সূত্রের খবর, সাত-আট বছর আগেও দলমার পাল থেকে এ রাজ্যে ঢুকে দু’তিন মাস থাকার পর ফের নিজেরাই ফিরে যেত স্থায়ী ঠিকানায়। কিন্তু গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে ছবিটা বদলে গিয়েছে। বন দফতর সূত্রে খবর, সমস্যা সমাধানে দলমা হাতির পাল রুখতে কুনকি হাতিতেই ভরসা করেছিল বন দফতর। এসেছে একাধিক ঐরাবত গাড়িও। লোকালয়ে ঢুকলে কম সময়ের মধ্যে বুনো হাতির পালকে জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ সব ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। কিন্তু তাতেও বাগে আসছে না
দলমার দাঁতালরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy