প্রতীকী ছবি।
এক সময় দল বেঁধে যাঁরা বন্দুক চালানোর তালিম নিতেন, জঙ্গলে মাইন পুঁতে উড়িয়ে দিতেন গাড়ি, তাঁরাই আসর মাতাবেন ঝুমুর গান আর আদিবাসী নাচে। শিলদায় রাজ্যস্তরের হুল উৎসবে এ বারের প্রধান আকর্ষণই হল আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
৩০ জুন থেকে ২ জুলাই তিনদিন ধরে রাজ্যস্তরের হুল দিবস উদ্যাপিত হবে ঝাড়গ্রামের শিলদায়। কী ভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে, সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা ইতিমধ্যে জেলায় এসেছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলার একটি করে আদিবাসী নৃত্যশিল্পীর দল অনুষ্ঠান করবে। ঝাড়গ্রাম জেলার লোকপ্রসার প্রকল্পের অন্তর্গত ৫টি দলও আদিবাসী নাচের অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। তা ছাড়া, রোজই রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত একলব্য বিদ্যালয়-সহ স্থানীয় একটি করে স্কুল-কলেজের আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের দল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবে।
প্রাক্তন মাওবাদীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এ রাজ্যে এই প্রথম। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আত্মসমর্পণ করে মাওবাদীরা যে সমাজের মূলস্রোতে ফিরেছেন, সাংস্কৃতিক কাজকর্মে যুক্ত হচ্ছেন, সেই বার্তা দিতেই এমন আয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। কতজন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, প্রতিটি দলে কত জন করে থাকবেন, সবই আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিক বরুণ মণ্ডল। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের নিয়ে একাধিক দল গড়া হতে পারে। এক-একটি দলে ন্যূনতম ৮-১০ জন থাকবেন। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে প্রায় ২০টি বইয়ের স্টলও থাকবে।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে এবং শীর্ষ মাওবাদী নেতা কিষেনজির মৃত্যুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত কয়েকশো মাওবাদী নেতা-নেত্রী আত্মসমর্পণ করেছেন। এই দলে রয়েছেন সাহেবরাম মুর্মু ওরফে জয়ন্ত, সুচিত্রা মাহাতো, জাগরী বাস্কের মতো এক সময়ের ত্রাস সব নেতা-নেত্রী। মূলস্রোতে ফেরাতে এঁদের সকলেই পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। চাকরি মিলেছে পুলিশে। কেউ কেউ আবার স্বনির্ভর হতে নানাবিধ হাতের কাজও শিখছেন। তাঁদেরই কেউ কেউ যে দরাজ গলায় গান গাইতে পারেন, নাচের তালে আসর মাতাতে পারেন, এ বার সেটাই দেখানোর পালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy