ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়ার বালাজি পেপার মিলের শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে গেল।
এক বছরেরও বেশি কাগজ কলটি বন্ধ। সম্প্রতি বন্ধ ওই কাগজকলের কাছে বকেয়া পাওনার দাবিতে ন্যাশন্যাল কোম্পানি ল’ ট্রাইব্যুন্যালের (এনসিএলটি) দ্বারস্থ হন এক অপারেশন্যাল ক্রেডিটার। অর্থাৎ কারখানাটি সচল রাখতে যিনি অর্থের জোগান দিতেন। কিন্তু টাকা ফেরত না পেয়ে অপারেশন্যাল ক্রেডিটার এনসিএলটি-র দ্বারস্থ হয়েছেন। ২৩ মার্চ শুনানি শুরু হয়। ৬ মে এনসিএলটি-র বেঞ্চ কারখানাটির দায়িত্ব এক ইনসলভেন্সি প্রফেশন্যালের হাতে তুলে দিয়েছে। ফলে কারখানার ‘বোর্ড অফ ডিরেক্টর্স’দের স্বাধীন ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়েছে। এর পরে কারখানাটি সচল রাখা যাবে, নাকি বিক্রি করে পাওনা মেটানো হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন ইনসলভেন্সি প্রফেশন্যাল। এ ব্যাপারে তিনি ন্যাশন্যাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুন্যালের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। যদি কারখানাটি আর সচল না হয়, তাহলে প্রায় সাড়ে তিনশো শ্রমিকের ভবিষ্যৎ কি হবে? প্রশ্ন তুলেছেন কাজহারা শ্রমিকরা।
মানিকপাড়ার ওই কাগজ কলটি বহু পুরনো। তিনবার হাত বদল হয়ে ২০০৪ সালে রুগণ কারখানাটি কিনে নেন বর্তমান মালিকগোষ্ঠী। আগে ওই কাগজ কলে দৈনিক প্রায় ৭০-৮০ মেট্রিক টন নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন হত। সেটা কমে শেষের দিকে দৈনিক ষাট মেট্রিক টন নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন হচ্ছিল। বছর চারেক আগে শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তি করেও দাবি-দাওয়া না মানার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘ভায়োলেশন অব এগ্রিমেন্টের’ প্রয়োজনীয় প্রসিডিং চলাচ্ছে শ্রম দফতর। কারখানায় তৃণমূল, বাম ও গেরুয়া প্রভাবিত তিনটি শ্রমিক ইউনিয়ন রয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে মালিকপক্ষ ও তিনটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে শ্রম দফতরের টেবিলে বেতন সংক্রান্ত চুক্তির জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁদের বেতন থেকে পিএফ কাটা হলেও তা বিভাগীয় দফতরে জমা পড়েনি। শ্রমিকদের ন্যায্য গ্র্যাচুইটিও দেওয়া হয় না। গত বছর কারখানা সচল থাকার সময়ে তিন মাস তাঁদের বেতনও দেওয়া হয়নি।