গণনার দিনে দীনেন (নীল পাঞ্জাবি)। নিজস্ব চিত্র
এও এক পাশ-ফেলের কাহিনী। সাত জনের ছ’জনই ফেল। মুখ রেখেছেন শুধু একজন।
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে এ বার একমাত্র খড়্গপুর (গ্রামীণ) বিধানসভায় জিতেছে তৃণমূল। জয়ের ব্যবধানও নেহাত কম নয়। ওই বিধানসভায় প্রায় ৯৩০০ ভোটের ‘লিড’ এসেছে। বাকি ছ’টি বিধানসভায় জিতেছে বিজেপি। দাঁতন, নারায়ণগড়ের মতো তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতেও এই হার কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়া। গণনার দিনে খড়্গপুরের গণনাকেন্দ্রের ধারেকাছে কয়েকজন বিধায়কদের দেখতে না পেয়ে উষ্মা প্রকাশ করতেও দেখা যায় তাঁকে। গণনা শেষের পরে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি আক্ষেপ করেন, সাত জনের মধ্যে ছ’জন বিধায়ক কাজ করল না। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘একমাত্র খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায় তাঁর অবস্থান এবং ভোট ধরে রেখেছেন। অন্য বিধানসভায় আমরা যদি সামলাতে পারতাম আমরা বিজেপিকে হারিয়ে দিতাম। সেটা হয়নি। দলকে বিশ্লেষণ করতে হবে। আমাদের দলে কেউ উল্টো কাজ করেছে কিনা দেখতে হবে।”
দীনের রায় জেলা রাজনীতিতে পুরনো মুখ। তিনি এখন জেলা চেয়ারম্যান। ভারতী ঘোষ জেলা পুলিশ সুপার থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে সংঘাত ছিল দীনেনের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন দীনেন একসময়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। তিনি জেলা সভাপতি থাকাকালীন জেলায় দলের সুদিন দেখেছে তৃণমূল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর বিধানসভার তিনটি পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি। গণনার দিনে সকাল থেকেই খড়্গপুরের গণনাকেন্দ্রের বাইরে তৃণমূলের ক্যাম্পে বসেছিলেন তিনি। নিজের বিধানসভা এলাকায় ‘লিড’ পাওয়ায় হাসি ফোটে তাঁর মুখে। তাঁর কথায়, “মানসদা জয়ী হলে বেশি খুশি হতাম। দীর্ঘদিন ধরে দল করছি। মানুষের সঙ্গে এখনও একইভাবে জনসংযোগ বজায় রেখে চলেছি। প্রচারের আশা করি না। মানুষের বিপদে পাশে থাকি। তাই হয়তো সুফল পেয়েছি।’’
দীনেনের প্রশংসা করে মানস বলছেন, “গণনার দিনেও অনেক বিধায়ক আসেননি। আমি প্রদ্যোৎ ঘোষ, বিক্রম প্রধান, পরেশ মুর্মুদের দেখিনি। বুঝলাম না কেন এলেন না! কিন্তু দীনেন রায় প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছেন। তাই তিনি সহকর্মীদের নিয়ে ভোটটা ধরে রাখতে পেরেছেন।’’ এমন কথা শুনে নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোৎ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “আমার শরীর খারাপ বলে গণনাকেন্দ্রে যেতে পারিনি। ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অনেকে অনেক কথা বলেন। সবাই নিজের অস্তিত্বরক্ষা করতে চায়। খড়্গপুর গ্রামীণে সংখ্যালঘু ভোটার অনেক বেশি বলে ওই বিধানসভায় ‘লিড’ পেয়েছে দল। নারায়ণগড়ে সংখ্যালঘু ভোটার খুব রম।’’ দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধানের দাবি, এলাকা সামলানোর জন্যই গণনা কেন্দ্রে যাননি তিনি। এলাকায় থেকেছেন। তিনি বলেন ‘‘আমি যে দাঁতন-১ ব্লকের সভাপতি সেই ব্লকে তো আমরা ভাল ফল করেছি। আসলে ধর্মীয় মেরুকরণ ও বামেদের ভোট বিজেপিতে যাওয়ায় এই খারাপ ফল হয়েছে।’’ পরেশ মুর্মুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy