তুকতাক, ঝাড়ফুক, কোথাও আবার রোগ সারতে ভরসা মাদুলি— মফঃস্বলের প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার বহু বাসিন্দার এখনও অগাধ আস্থা ‘বাবাজি’দের উপরে। তাঁদের সেই আস্থায় ভর করে জেলার বহু গ্রামে ‘বাবাজি’দের ব্যবসা পসার ভালই রয়েছে। কিন্তু, বাবাজিদের বদলে চিকিৎসকদের উপরে যাতে আমজনতা ভরসা বেশি করেন, সেই উদ্দেশ্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করতে চলছে হলদিয়া পুরসভা। সেই কাজে গ্রামীণ চিকিৎসকদের সঙ্গী করা হবে।
হলদিয়া পুরসভা সূত্রের খবর, পুর এলাকার গ্রামীণ চিকিৎসকদের নিয়ে প্রথমে একটি কর্মশালা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই কর্মশালাতে গ্রামীণ চিকিৎসকদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং কোন রোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক কী ধরনের পদক্ষেপ করা উচিত, সেই শিক্ষা দেওয়া হবে। বিশিষ্ট চিকিৎসকদের দিয়ে চলবে ওই প্রশিক্ষণ শিবির। পরে ওই গ্রামীণ চিকিৎসকদের দিয়েই আমজনতার মধ্যে অজ্ঞাতা দূর করতে প্রচার চালানো হবে। পুরসভার দাবি, প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে গ্রামবাসী যাতে গ্রামীণ চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন, সেই জন্য এই কর্মশালার উদ্যোগ। গ্রামীণ চিকিৎসকেরা যাতে এই কর্মসূচির প্রতি আগ্রহী হন, সে জন্য তাঁদের সংবর্ধনাও দেওয়া হবে।
হলদিয়া মহকুমা এলাকায় মাস কয়েক আগেই এক ‘মাদুলি বাবা’র বাড়বড়ন্ত দেখা গিয়েছিল। আর সমস্ত রোগ তো বটেই, ওই বজরুক মাদুলি পরিয়ে করোনা রোগকেও নিরাময় করার বার্তা দিয়ে বেড়িয়েছিল। ১০০ থেকে এক হাজার টাকা দামে সেই মাদুলি বিক্রি হচ্ছিল দেদার। পরে পুলিশ ওই ভণ্ড ‘বাবা’কে গ্রেফতার করেছিল। সে সময় কয়েকদিন সেই বুজরুকি নিয়ে জোর আলোচনা, সচেতনতা শিবির হলেও এখন ফের পুরনো অবস্থায় ফিরেছ বলে দাবি। তাই উদ্যোগী হচ্ছে পুরসভা। হলদিয়ার পুরপ্রধান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘হলদিয়ার পুরবাসী যাতে ভণ্ড বাবাদের দ্বারস্থ না হন, সে জন্য গ্রামীণ চিকিৎসকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। পুরবাসী যেন হাত বাড়ালেই প্রাথমিক ভাবে কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন, সে জন্য এই উদ্যোগ।’’