ফের ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে এগরা মহকুমার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমি। সোমবার পটাশপুরের ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। এ দিন দুপুরে পটাশপুর-১ ব্লক অফিসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অবস্থা নিয়ে একটি বৈঠক করেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ছিলেন সমবায় মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর।
পটাশপুর-২ ব্লকে দুপুর ২টোয় এক অনুষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত বোরোধান চাষিদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী, সমবায় মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, এগরা মহকুমার ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন প্রমুখ। কয়েকজনের হাতে জমির পাট্টাও তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। গ্রামবাসীর হাতে ত্রাণও তুলে দেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জলমগ্ন এগরা মহকুমার ভগবানপুরের গুড়গ্রাম, মুণ্ডুভাঙা, মহ্মমদপুর, কালুপুর, মির্জাপুর-সহ কোটবাড় অঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ত্রাণ শিবিরগুলিতেও বাড়ছে ক্ষোভ। ভগবানপুর-১ ব্লকের বিরোধী দলনেতা ও সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য সুব্রত মহাপাত্রের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের দেওয়া ত্রান পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছচ্ছেও না।’’
একই অবস্থা কাঁথি মহকুমারও। এ দিন সকাল থেকে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কাঁথি মহকুমার কাঁথি-১, দেশপ্রাণ, কাঁথি-৩, রামনগর-১ ও ২, ভগবানপুর-২ ও খেজুরির ২টি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। কাঁথি মহকুমার আটটি ব্লকের ৪৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩২৮টি মৌজার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। রামনগর-২ ব্লকের মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পিছাবনি ও সোনামুই খালের জল উপচে ধান জমি ও পানের বরজেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তমালতরু দাসমহাপাত্র। তমালবাবুর অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় মজে গিয়েছে পিছাবনি খাল। ফলে বর্ষায় খালের জল উপচে পঞ্চায়েতের নানা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।’’ জলমগ্ন দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা অঞ্চলের অযোধ্যাপুর, দুরমুঠ, সটিকেশ্বর, মৈশামুণ্ডা ও হরিজন পল্লি এলাকাও। মৈশামুণ্ডায় প্রায় ৫০টি বাড়ি ক্ষতি হয়েছে বলে সরদা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সইফুন নেহার বেগম জানান। বামুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কল্লোল পাল জানান, জুনপুট থেকে দগড়া পর্যন্ত নিকাশি খালের জল উপচে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। জল জমে থাকায় বন্ধ রাখতে হয়েছে দক্ষিণ কাদুয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিও। সোমবার বিকেলে রামনগর-১ ও ২ ব্লকের বেশকিছু ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।