ঝাড়গ্রামের বিনোদমঞ্জরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সংসদের অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র
অশোক-পলাশে সেজেছে জঙ্গলমহল। রাস্তার ধারের শালগাছে এসেছে নতুন পাতা। বুধবার থেকেই হাওয়ায় উড়ছে আবির-গুলাল। জঙ্গলমহলের বসন্তে এ বার নতুন ছোঁয়া!
মূলত পর্যটনের প্রসারের জন্য ২০১৪ সালে বেসরকারি উদ্যোগে অরণ্য শহরের রবীন্দ্রপার্কে বসন্ত উৎসব শুরু হয়েছিল। ঝাড়গ্রামের একটি ট্যুরিজম সংস্থা আয়োজিত ওই বসন্ত উৎসব এ বার ৬ বছরে পা দিল। আজ, বৃহস্পতিবার পর্যটন সংস্থার বসন্ত উৎসবে হাঁড়ি ভর্তি আবির ফাটিয়ে উৎসবের সূচনা করবেন রায়বেঁশে নাচের লোকশিল্পীরা। সারা দিন ধরে থাকছে আবির খেলা, লোকনৃত্য ও লোকগানের অনুষ্ঠান। উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ মহুল ব্যান্ডের পার্থ ভৌমিক এবং সোনাই সেন, লোকগানের দল অচিনপাখি এবং ঝুমুরসম্রাজ্ঞী ইন্দ্রাণী মাহাতো। পর্যটন সংস্থার কর্ণধার সুমিত দত্ত বলেন, ‘‘পর্যটনের প্রসার ও পর্যটকদের সঙ্গে ঝাড়গ্রামের লোকসংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন।’’
এ বার অরণ্যশহরের ঘোড়াধরা পার্কের তিন দিনের বসন্ত উৎসব অন্য মাত্রা পেয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আয়োজিত ওই উৎসবেরর এ বার তৃতীয় বর্ষ। গত দু’টি বছর ওই উৎসব হয়েছিল একদিনের। এ বার হচ্ছে তিনদিনের। আয়োজক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ব্রত বেরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় হোলিকা-দহন দিয়ে এ বারের বসন্ত উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। উৎসব চলবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ বারের উৎসব তিন দিনের কেন? প্রিয়ব্রতের জবাব, ‘‘ঝাড়গ্রামে ভালমানের হোটেল ও অতিথিশালার সংখ্যা সীমিত। যাতে পর্যটকেরা বেশি করে এখানে এসে উৎসবের আনন্দ নিতে পারেন, সেজন্যই তিন দিনের উৎসব হচ্ছে।’’ বুধবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার দোলের দিন ঘোড়াধরা পার্ক থেকে আবির উড়িয়ে, রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরে বিভিন্ন বয়সীরা শোভাযাত্রা করে শহর পরিক্রমা করে ফের ঘোড়াধরা পার্কে ফিরে আসবেন। যাঁরা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, তাঁদের সবার জন্য থাকছে মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা।
এবার শহরে আরও বসন্ত উৎসব হচ্ছে। বুধবার ঝাড়গ্রাম রানি বিনোদমঞ্জরী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সংসদ আনন্দমঞ্জরীর উদ্যোগে স্কুলের মাঠে প্রথম বছরের বসন্ত উৎসব হয়েছে। ঝাড়গ্রাম লজ-হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন কর্মকার বলেন, ‘‘বুধবার থেকেই শহরের সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত অতিথিশালা ভর্তি হয়ে গিয়েছে। আগামী রবিবার পর্যন্ত কোথাও খালি নেই। থাকার জায়গা না পেয়ে অনেকে নিরাশ হয়ে ঘাটশিলায় চলে গিয়েছেন।’’ তিনি জানান, এ বছর শহরে কয়েকটি নতুন বেসরকারি অতিথিশালা চালু হয়েছে। তারপরেও সব পর্যটকের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পিছিয়ে নেই মেদিনীপুরও। এখানেও বুধবার থেকেই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে। বুধবার মেদিনীপুরে দোল উপলক্ষে এক বৈকালিক পদযাত্রা হয়। আয়োজক ছিল স্থানীয় বাংলা ব্যান্ড পারিজাত। শহরের রবীন্দ্র নিলয়ের সামনে থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। আয়োজক ব্যান্ডের পক্ষ থেকে কিংশুক রায়, স্বাগত মাইতিরা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই তাঁরা এই আয়োজন করে আসছেন। দোলের দিনে মেদিনীপুরের অনেকেরই নজর থাকে বিদ্যাসাগর হলের মাঠের দিকে। মেদিনীপুর বসন্ত উৎসব কমিটির উদ্যোগে এখানে অনুষ্ঠান হয়। থাকে গান, নৃত্য, কবিতাপাঠ। এই উৎসব এ বার ৩৭ বছরে পা দিচ্ছে। আয়োজকদের পক্ষে আলোকবরণ মাইতি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর হলের মাঠে এই বসন্ত-বন্দনায় অনেকেই আসেন। সকলেই খুব আনন্দ করেন।’’ কাল, শুক্রবার হোলি মিলন সমারোহের আয়োজন থাকছে শহরের পঞ্চুরচকে। পঞ্চুরচক নাগরিক সমিতির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান হয়। বুধবার গড়বেতা স্টেশনের কাছেও একটি সংস্থার উদ্যোগে বসন্ত উৎসব পালিত হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy