Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গরম প়ড়তেই বাড়ছে হুকিং

ভোরের দিকে শীতের আমেজ থাকলেও রোদ উঠলেই মনে হচ্ছে, একটু পাখা চালালে ভাল হয়। আর গরম পড়তেই রেলশহরে ফের হুকিংয়ের রমরমা। রাস্তার বিদ্যুৎ খুঁটির তার থেকে অবৈধভাবে হুকিং করে তার টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাড়িতে।

চুরি: এ ভাবেই চলে হুকিং (চিহ্নিত)। খড়্গপুরে। নিজস্ব চিত্র

চুরি: এ ভাবেই চলে হুকিং (চিহ্নিত)। খড়্গপুরে। নিজস্ব চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০১:১৩
Share: Save:

ভোরের দিকে শীতের আমেজ থাকলেও রোদ উঠলেই মনে হচ্ছে, একটু পাখা চালালে ভাল হয়। আর গরম পড়তেই রেলশহরে ফের হুকিংয়ের রমরমা। রাস্তার বিদ্যুৎ খুঁটির তার থেকে অবৈধভাবে হুকিং করে তার টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাড়িতে। বিদ্যুৎ চুরি বাড়তে থাকায় কম ভোল্টেজের সমস্যাও বাড়ছে বলে অভিযোগ। নজর নেই বিদ্যুৎ দফতরের।

খড়্গপুর শহরের রেলবস্তি ছাড়াও খরিদা, ছত্তীসপাড়া, কুমোরপাড়া, রাজগ্রাম, ভবানীপুর, কৌশল্যায় হুংকিয়ের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। বিদ্যুৎ চুরি চুরি রুখতে ও ঝড়ে তার ছিড়ে যাওয়া ঠেকাতে ‘এরিয়াল বাঞ্চ কেবল’ বসানোর কথা ছিল চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যে। এই কেবলে একটি মোটা পাইপের মতো কভারের মধ্যে দিয়ে চার থেকে পাঁচটি তার নিয়ে যাওয়া যাবে। উন্মুক্ত বিদ্যুতের তার না থাকায় কমানো যাবে হুকিংয়ের সমস্যাও। যদিও শহরের সামান্য কয়েকটি এলাকাতেই এই কাজ হয়েছে। ফলে রাশ টানা যায়নি হুকিংয়েও।

শহরের খরিদার বাসিন্দা গোপাল মল্লিকের অভিযোগ, “চোখের সামনে অবাধে হুকিং হতে দেখছি। একাংশ বাসিন্দা বিদ্যুৎ চুরি করছে। আর আমাদের বিদ্যুতের বিল দিনে-দিনে বাড়ছে। কাকে কী বলব।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সমস্যার কথা বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী-আধিকারিকদের বারবার জানানো হলেও হুঁশ ফেরেনি।” একই দাবি ভবানীপুর মাঠপাড়ার ব্যবসায়ী সুবীর দাশগুপ্তরও। তিনি বলছেন, “কারা হুকিং করছে জানলেও বলতে পারব না। এই নিয়ে বলতে গেলে যাঁরা হুকিং করছে তাঁরা আমার উপরে চড়াও হবে। আর বিদ্যুৎ দফতরও কোনও ব্যবস্থা নেবে না। তাই মুখ বুজে সব সহ্য করতে হচ্ছে।”

হুকিংয়ের ঘটনা বাড়তে থাকায় বিদ্যুতের কম ভোল্টেজের সমস্যা বাড়ছে। ট্রান্সফর্মার পুড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। কুমোরপাড়ার বাসিন্দা রেলকর্মী সমীর কুণ্ডু, ছোটট্যাংরার ঋষি পালেরা বলেন, “সবসময় বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠা-নামা করে। বিদ্যুৎ চুরির জন্য এমনটা হতেই পারে।”

যদিও বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, তারা তৎপর থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের মদতে বিদ্যুৎ কর্মীদের বিপদে পড়তে হয়। অভিযানে গিয়েও দফতরের কর্মীদের আক্রান্ত হয়ে ফিরে আসতে হয়।

বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের খড়্গপুরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার তন্ময় মহাপাত্র বলেন, “এটা ঠিক, গরম পড়তেই বিদ্যুৎ চুরির প্রবণতা বাড়ছে। কম ভোল্টেজ ও ভোল্টেজ ওঠা-নামার সমস্যার এটা অন্যতম কারণ। সমস্যা মেটাতে ধরপাকড় চলছে। খড়্গপুর শহরে সম্প্রতি ৬টি মামলাও রুজু করা হয়েছে।” বিদ্যুৎ চুরি রুখতে কেন সর্বত্র ‘এরিয়াল বাঞ্চ কেবল’ বসানোর কাজ হচ্ছে না? তন্ময়বাবুর কথায়, “শহরের কিছু অংশে ‘এরিয়াল বাঞ্চ কেবল বসানোর কাজ হয়েছে। আসলে ‘ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিম’ ও ‘রিস্ট্রাকচার্ড অ্যাক্সেলারেটেড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্মস প্রোগ্রাম’-এ এই কাজ করা হচ্ছে। সদ্য একটি সংস্থাকে কাজের বরাতও দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা শহরে কেবল বসানোর কাজ করবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hooking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE