Advertisement
০৫ মে ২০২৪

অস্ত্রোপচারে দেরি নয়, নির্দেশ পশ্চিমে

চোখ, কান-সহ জেনারেল সার্জারি নিয়ে ৬০-৭০টি অস্ত্রোপচার করা হয় ঘাটাল হাসপাতালে। সংখ্যাটা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৩
Share: Save:

সামান্য নাক, কান বা গলার কোনও অস্ত্রোপচার বা গলব্লাডার স্টোন কি অ্যাপেন্ডিসাইটিস— সরকারি হাসপাতালে গেলে অস্ত্রোপচারের তারিখ মেলে এক-দেড় কি দু’মাস পরে। বকলমে এটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটাই ভাঙতে উদ্যোগী হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য ভবন।

শনিবার ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সমস্ত চিকিৎসকদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। সেখানেই উঠে আসে রোগী রেফার থেকে অস্ত্রোপচারে দেরি— সব প্রসঙ্গই। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সাধারণ অস্ত্রোপচার, চিকিৎসকরা যাকে ‘কোল্ড অপারেশন’ বলেন, তা শেষ করতে হবে। কোনও ভাবেই এক-দেড় মাস পরে সময় দেওয়া যাবে না রোগীকে।

চোখ, কান-সহ জেনারেল সার্জারি নিয়ে ৬০-৭০টি অস্ত্রোপচার করা হয় ঘাটাল হাসপাতালে। সংখ্যাটা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং অপারেশন থিয়েটরের সুবিধাই রয়েছে। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে তেমন কোনও সমস্যা নেই বলেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

তারপরই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে কোনও আপোস করা যাবে না। রোগীদের হয়রনি বন্ধ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে ঘাটাল হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ মেনে এ বার ‘কোল্ড’ অস্ত্রোপচারের সময়সীমা কমানো হবে।”

কিন্তু সে সব এতদিন করা হয়নি কেন? মন্তব্য করতে চাননি সুপার।

তবে ঘাটাল হাসপাতালের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথায়, “এতদিন কর্তৃপক্ষও আমাদের চাপ দেননি। তাই আমরা নিজেদের মতো করে অস্ত্রোপচারের সময় দিতাম।’’ ওই চিকিৎসকের দাবি, সপ্তাহে অস্ত্রোপচারের দিন একদিন বাড়িয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। একই বক্তব্য অন্য চিকিৎসকদেরও।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ঘাটাল হাসপাতালে পরিষেবা ঠিকঠাকই চলছে। চিকিৎসকদের বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোল্ড অস্ত্রোপচারের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।”

ইউএসজি বিভাগ নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন বেলা ২টোর পর ওই বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এ বার থেকে বিকেল ৫ টা পযর্ন্ত ইউএসজি বিভাগ খোলা রাখার নির্দেশ এসেছে। মাস খানেক পর থেকে ওই সময়সীমা বেড়ে রাত ৮ টা পযর্ন্ত করা হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘এ বার থেকে কোনও রোগী ইউএসজি করাতে এলে তাঁকে ফেরানো যাবে না। কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে এ বিষয়ে।’’

প্রেসক্রিপশন নিয়েও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক একপ্রস্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সরকারি হাসপাতালে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখা বাধ্যতা মূলক। কিন্তু অভিযোগ, চিকিৎসকেরা এখনও সাদা কাগজে নির্দিষ্ট কোম্পানির নাম লিখে তা বাইরের দোকান থেকে রোগীদের কিনতে বাধ্য করেন। বহির্বিভাগের রোগীদের ক্ষেত্রেও এমন করা হয় বলে অভিযোগ।

এ দিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্পষ্ট জানিয়েছে দেন, নির্দেশ মানা না হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

USG patient Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE