বুথে ভূতের নেত্য নিয়ে প্রথম থেকেই সরব বিরোধীরা। অনেক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকার অভিযোগও উঠেছে। বিরোধীদের দাবি, গত লোকসভা ভোটেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যত বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ফলে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছিল। এ বারও অনেক ফাঁকা বুথেই তরতর করে বেড়েছে ভোটের হার। তাই ভোট শুরুর তিন-চার ঘণ্টা পরেই দেখা গিয়েছে, কোথাও ৪০, কোথাও ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে গিয়েছে। বিধানসভা ভিত্তিক ভোট শতাংশের বেশি হারেও অন্য গন্ধই পাচ্ছে বিরোধীরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৯টি কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। ৪ এপ্রিল প্রথম দফায় ৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ১১ এপ্রিল ভোটগ্রহণ হয়েছে জেলার বাকি ১৩টি কেন্দ্রে। দেখা যাচ্ছে, জেলার অধিকাংশ কেন্দ্রেই ভোট ৮০ শতাংশের উপরে। অনেক কেন্দ্রে গত লোকসভা ভোটের থেকে ভোটদানের হার অনেকটাই বেশি। গত লোকসভা ভোটে নারায়ণগড়ে ভোটদানের হার ছিল ৮৮.৬৫ শতাংশ। এ বার বিধানসভায় ভোটদানের হার ৯০.৬২ শতাংশ। সবংয়ে গত লোকসভা এবং এ বারের বিধানসভায় ভোটদানের হার যথাক্রমে ৮৯.৩৬ শতাংশ এবং ৮৮.৮১ শতাংশ। বিনপুরে গত লোকসভায় ভোট পড়েছিল ৮১.৮১ শতাংশ। এ বার বিধানসভায় ভোট পড়েছে ৮৪.৩২ শতাংশ।
নয়াগ্রামে গত লোকসভার নিরিখে ভোট পড়েছিল ৮৪.০২ শতাংশ। এ বার বিধানসভায় ভোট পড়েছে ৮৪.৭৮ শতাংশ। গোপীবল্লভপুরে লোকসভায় ভোট পড়েছিল ৮৭.২১ শতাংশ। বিধানসভায় ভোট পড়েছে ৮৭.৬১ শতাংশ। খড়্গপুর গ্রামীণে লোকসভায় ভোট পড়েছিল ৮৭.২৪ শতাংশ। বিধানসভায় ভোট পড়েছে ৮৮.৪৫ শতাংশ। ডেবরায় লোকসভায় ভোট পড়েছিল ৮৯.২৯ শতাংশ। বিধানসভায় ভোট পড়েছে ৮৯.০৮ শতাংশ।
গত লোকসভা ভোটও অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটাই ঘটে। গত বেশ কয়েকটি ভোটেই এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। এ বার বিধানসভায় গোড়া থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে রাজ্যকে কড়া বার্তা দিয়েছিল কমিশন। অবশ্য এ বারও সর্বত্র বাহিনীকে ঠিক মতো ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি বিরোধীদের। ফলে, বুথে বুথে সেই ভূতের নেত্য চলেছে!
সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ের দাবি, “জেলার সর্বত্র অবাধ ভোট হয়নি। কিছু এলাকায় তৃণমূলের লোকজন ছাপ্পা ভোট দিয়েছে।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়ারও বক্তব্য, “কয়েকটি এলাকায় স্বাভাবিক ভোট হয়নি।” বিজেপির জেলা সভাপতি ধীমান কোলের মতে, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরও সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল।’’ বিরোধীদের দাবি অবশ্য গায়ে মাখতে নারাজ শাসকদল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “জেলায় গত পঞ্চায়েত-লোকসভা ভোট নির্বিঘ্নে হয়েছে। এ বারের বিধানসভা ভোটও সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে। তেমন কোনও গোলমালই হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy