Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

যারা নারীকে ডাইনি বলে, তারা কলঙ্ক, বলছেন আদিবাসী নেতারা

রবিবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের পাটাশিমূল অঞ্চলের উত্তরা পিণ্ড্রাশোল গ্রামের এক জনসভায় এমনই জানালেন আদিবাসী সমাজের বিশিষ্টজনরা। ওই সভার আয়োজক ছিল ‘ভারত জাকাত সারনা ধরম জেমেৎ আসড়া’ নামে একটি সর্বভারতীয় সংগঠনের স্থানীয় শাখা।

পাটাশিমূল অঞ্চলে আদিবাসী সংগঠনের সভা। নিজস্ব চিত্র

পাটাশিমূল অঞ্চলে আদিবাসী সংগঠনের সভা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম ও শালবনি: শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫২
Share: Save:

আদিবাসী সমাজ কোনও কুসংস্কার অনুমোদন করে না। ডাইনি, গুনিন, ওঝা, ঝাড়ফুঁকের মতো বিষয়গুলি কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের সৃষ্টি। আদিবাসীরা আসলে প্রকৃতির উপাসক। তাঁদের সমাজে নারীর স্থান উপরে। সেই নারীকে যারা ডাইনি আখ্যা দেয়, তারা আসলে সমাজের কলঙ্ক।

রবিবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের পাটাশিমূল অঞ্চলের উত্তরা পিণ্ড্রাশোল গ্রামের এক জনসভায় এমনই জানালেন আদিবাসী সমাজের বিশিষ্টজনরা। ওই সভার আয়োজক ছিল ‘ভারত জাকাত সারনা ধরম জেমেৎ আসড়া’ নামে একটি সর্বভারতীয় সংগঠনের স্থানীয় শাখা। সেখানে ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি কানুরাম টুডু, উত্তরা পিণ্ড্রাশোল শাখার সভাপতি খগেন্দ্রনাথ সরেন, শাখা সম্পাদক শম্ভুনাথ কিস্কু প্রমুখ। এ দিন আদিবাসী সমাজকে পিছিয়ে রাখার চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তাঁরা জানান, আদিবাসী সমাজকে নেশামুক্ত ও কুসংস্কারমুক্ত করার লক্ষ্যে প্রচার চালাচ্ছে তাঁদের সংগঠন। ঝাড়গ্রাম জেলার আদিবাসী গ্রামগুলিতে সারা বছর ধরে এই ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি হবে বলেও জানান তাঁরা। এ দিনের সভায় ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন ব্লকের পাশাপাশি, ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন এসেছিলেন।

এ দিনই ডাইন প্রথা সংক্রান্ত কুসংস্কার ঠেকাতে সচেতনতা শিবির শুরু করল শালবনি ব্লক প্রশাসন। রবিবার ব্লক প্রশাসনের একটি দল শালবনির জামদারগড়ে গিয়ে স্থানীয় মানুষদের সচেতন করেন। সেই দলে ছিলেন বিডিও সঞ্জয় মালাকার, পুলিশের এসআই পলাশ মিত্র, শালবনি কলেজের অধ্যাপিকা আম্পা হেমব্রম, সীতানাথপুর হাইস্কুলের শিক্ষক পীযূষ হাঁসদা প্রমুখ।

শালবনির বিডিও বলেন, ‘‘ডাইন কুপ্রথা নিয়ে মানুষজনকে সচেতন করা হচ্ছে। এ দিন আমরা একটি গ্রামে গিয়েছিলাম। স্থানীয়দের বুঝিয়েছি যে ডাইন বলে কিছু নেই। আগামী দিনে আরও কয়েকটি গ্রামে যাব।’’ বস্তুত, শালবনির কয়েকটি এলাকায় ডাইন সন্দেহে অত্যাচারের ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে। কুসংস্কারের শিকার হয়ে অনেকে পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। দেখা গিয়েছে, সব ঘটনার পিছনেই থাকে গুনিনের নিদান।

প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার গুনিনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিডিও বলেন, ‘‘কুসংস্কার দূর করতেই হবে। সচেতনতামূলক প্রচারে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tribal Tribe Witch Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE