Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

লক্ষ্মণের দলের পোস্টারে সেই জ্যোতি-সুভাষ

খাতায়-কলমে তিনি সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত। দল থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি নিজে ভারত নির্মাণ মঞ্চ নামে নতুন একটি দল তৈরি করেছেন। সেই দল পার্টির মর্যাদাও পেয়েছে। আর লক্ষ্মণ শেঠের সেই দলেরই জেলা সম্মেলন উপলক্ষে তৈরি হওয়া তোরণে ছবি রয়েছে প্রয়াত সিপিএম নেতা জ্যোতি বসু, সুভাষ চক্রবর্তী, সুকুমার সেনগুপ্তর। আর এই ঘটনা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন।

তমলুক ও সুতাহাটা শহরের তোরণে প্রয়াত বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তী ও  জোতি বসুর ছবি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস ও আরিফ ইকবাল খান।

তমলুক ও সুতাহাটা শহরের তোরণে প্রয়াত বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তী ও জোতি বসুর ছবি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস ও আরিফ ইকবাল খান।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০১:০৮
Share: Save:

খাতায়-কলমে তিনি সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত। দল থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি নিজে ভারত নির্মাণ মঞ্চ নামে নতুন একটি দল তৈরি করেছেন। সেই দল পার্টির মর্যাদাও পেয়েছে। আর লক্ষ্মণ শেঠের সেই দলেরই জেলা সম্মেলন উপলক্ষে তৈরি হওয়া তোরণে ছবি রয়েছে প্রয়াত সিপিএম নেতা জ্যোতি বসু, সুভাষ চক্রবর্তী, সুকুমার সেনগুপ্তর। আর এই ঘটনা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন।

মাস এগারো আগে দলবিরোধী কাজের জন্য লক্ষ্মণ শেঠ-সহ বেশ কয়েকজন সিপিএম নেতাকে দল থেকে বিতাড়নের সিদ্ধান্ত নেয় সিপিএম। সেই ঘটনার পর, গত বছর ১ অগস্ট পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম থেকে বিতাড়িত নেতারা লক্ষণ শেঠের নেতৃত্বে ভারত নির্মাণ মঞ্চ তৈরি করেন। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নির্মাণ মঞ্চ থেকে ভারত নির্মাণ পার্টি তৈরি হয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী শনিবার ও রবিবার ভারত নির্মাণ পার্টির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন হবে হলদিয়ার সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী হলে। শনিবার বিকালে সুবর্ণজয়ন্তী হল লাগোয়া মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ দিয়ে জেলা সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা। সম্মেলনের এলাকার নাম দেওয়া হয়েছে গৌতমবুদ্ধ নগর এবং মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চ। বক্তা হিসাবে থাকবেন ভারত নির্মাণ পার্টির রাজ্য সভাপতি লক্ষ্ণণ শেঠ, ভারত নির্মাণ পার্টির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর গুপ্ত প্রমুখ।

প্রসঙ্গত কয়েক মাস আগেই সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী হলেই সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্মেলন হয়েছে। সুবর্ণজয়ন্তী হল লাগোয়া মাঠে সিপিএমের প্রকাশ্য সভাতে বিমান বসু থেকে শুরু করে সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেবের মত সিপিএম নেতারা বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে লক্ষ্ণণ শেঠকে বিঁধতে কসুর করেননি বাম নেতারা। আবার সুযোগ পেয়ে নানা সভায় বামেদের তুলোধোনা করেছেন লক্ষ্ণণবাবুও। তাই লক্ষ্মণবাবুর দলের অনুষ্ঠানে মাতঙ্গিনী হাজরা, ক্ষুদিরাম বসুর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গেই প্রয়াত সিপিএম নেতা জ্যোতি বসু, সুভাষ চক্রবর্তী, সুকুমার সেনগুপ্তর ছবি তৈরি করেছে বিতর্ক। পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ওই নেতাদের ছবি রয়েছে।

সিপিএম ছেড়ে ভারত নির্মাণ পার্টি গড়েছেন। তা সত্ত্বেও নতুন দলের অনুষ্ঠানে সিপিএমের প্রয়াত তিন নেতার ছবি কেন ব্যবহার করলেন? ভারত নির্মাণ পার্টির রাজ্য সভাপতি লক্ষণ শেঠের উত্তর, ‘‘জ্যোতিবাবু, সুভাষ চক্রবর্তী বা সুকুমার সেনগুপ্ত শুধু সিপিএম নেতা নন, তাঁরা একেবারেই জননেতা। জ্যোতিবাবু কিংবদন্তি নেতা ছিলেন। সুভাষ চক্রবর্তীও জননেতা আর সুকুমারদা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও উদারচেতা নেতা। তাই অন্যান্য স্বাধীনাত সংগ্রামী, মনীষীদের পাশাপাশি আমরা এই তিন জননেতার ছবি ব্যবহার করেছি। এতে বিতর্কের কিছুই নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE