E-Paper

এনআইএ আর ভাবায় না লতাকে

লতারানি মান্না ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর আরেক পরিচয় তিনি বিস্ফোরণে নিহত তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার স্ত্রী।

গোপাল পাত্র

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪৮
লতারানি মান্না। নিজস্ব চিত্র

লতারানি মান্না। নিজস্ব চিত্র

চৈত্রের উত্তাপ ঘরের বাইরে। এনআইএ আধিকারিকদের উপরে হামলার পরে এলাকায় রয়েছে রাজনৈতিক উত্তাপও। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে নিরুত্তাপ লতারানি মান্না। অ্যাসবেস্টাসের ঘরে দুপুরের গনগনে তাপের মধ্যে শিল-নোড়ায় বাটনা বাটছিলেন ওই প্রৌঢ়া। মাঝে আঁচলে ঘাম মোছার সময় বললেন, ‘‘এনআইএ নিয়ে কী হয়েছে বলতে পারব না।’’ সেই কথার মধ্যেই কোথাও যেন লুকিয়ে ছিল স্বামী হারানোর যন্ত্রণা।

লতারানি মান্না ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর আরেক পরিচয় তিনি বিস্ফোরণে নিহত তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার স্ত্রী। বছর দু’য়েক আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাজকুমারের বাড়িতে হয়েছিল ভয়াবহ বিস্ফোরণ। তাতে রাজকুমার-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই মামলার তদন্তে এসে শনিবার নাড়ুয়াবিলা গ্রাম থেকে রাজকুমারেরই প্রতিবেশী তথা বর্তমান তৃণমূল বুথ সভাপতি মনোব্রত জানাকে গ্রেফতার করেছে। ওই গ্রেফতারি ঘিরে এ দিন এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। কাকভোরে এনআইএ আধিকারিকদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।

এ দিন এত কিছু যখন ঘটছে, তখন বাড়িতে আসা মেয়ে ও জামাইদের জন্য রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন লতারানি। ঘরের বাইরে গিয়ে কিছু জানার প্রয়োজন তিনি মনে করেনি। লতারানি জানাচ্ছেন, বিস্ফোরণে তাঁদের গোটা বাড়ি উড়ে গিয়েছিল। স্বামীহারা লতা সে সময় মেয়ে ও জামাইদের সঙ্গে বাইরে দিন কাটিয়েছেন। মাস ছয়েক আগে জামাইদের আর্থিক সহযোগিতায় কংক্রিটের খুঁটি দিয়ে অ্যাসবেস্টাসের বাড়ি তিনি তৈরি করেছেন। তবে সংসার চালাতে এখনও মেয়ে-জামাইরা তাঁকে সাহায্য করেন। গ্রামের অনুষ্ঠানে ওই নতুন বাড়িতে এসেছেন মেয়ে, জামাই, ননদরা। শুক্রবার রাতে মেয়েদের সঙ্গে তিনি যাত্রা দেখতে গিয়েছিলেন।

এ দিন আর রাস্তায় বেরোননি। মামলার তদন্তে আসা এনআইএ, গ্রেফতারি— এই সব ঘটনা তাঁর স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। স্বামী হারানোর পুরনো যন্ত্রণা থেকেই নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন বলে জানান এই প্রৌঢ়া। এ দিন লতা দাবি করেন, বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল স্বামীর। তাই বাজি তৈরি কারবারও বন্ধ করার দাবি তিনি করেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্বামীর মৃত্যু পরে মেয়ে ও জামাইদের বাড়িতে দিন কাটিয়েছি। জামাইরা বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। সরকারি বা কোনও রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা পাইনি। এখন এনআইএ এসে কী করছে, বলতে পারব না। তবে বাজি কারবার যেন বন্ধ হয়, সেই আবেদন জানাচ্ছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bhupatinagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy