দু’বারের বিধায়ক ও এ বারের তৃণমূল প্রার্থী সমরেশ দাসের প্রচার যখন কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে, তখনও এগরা কেন্দ্রে প্রার্থীই ঠিক করতে পারল না বামফ্রন্ট। বিরোধীদের এই ছন্নছাড়া অবস্থা ও বামেদের নিজেদের মধ্যে পরস্পর বিরুদ্ধ মতামত তাঁদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানাচ্ছেন বাম ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা।
২০০৬ ও ২০০৯ সালে এগরা থেকে জিতে বাম সরকারে মন্ত্রী হয়েছিলেন ডিএসপি দলের প্রবোধচন্দ্র সিংহ। ২০১১ সালে পিংলা থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। ২০১১ সালে তাঁর অবর্তমানে এগরা থেকে ভোটে দাঁড়ান দলের জেলা সম্পাদক পেশায় অধ্যাপক হৃষিকেশ পয়ড়্যা। তিনি তৃণমূল ও কংগ্রেস জোটের কাছে পরাজিত হন প্রায় পনেরো হাজার ভোটে। বামফ্রন্ট সূত্রে খবর, ডিএসপি ফের হৃষিকেশবাবুকেই এগরা প্রার্থী করতে চাইলেও জেতার লক্ষ্যে আরও জোরদার কোনও প্রার্থী চাইছে সিপিএম। আবার সিপিএম চাইছে, এগরায় তৃণমূল প্রার্থীকে হারাতে হলে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করাতে হবে। তাতে সহমত পোষণ করেছে কংগ্রেস, বিক্ষুব্ধ তৃণমূল ও বিক্ষুব্ধ বিজেপি। কিন্তু, দলের জন্য নির্দিষ্ট আসনে নির্দল দাঁড় করাতে চায় না ডিএসপি। সিপিএম ও কংগ্রেসের বক্তব্য, এমনিতেই এই দলের নিজস্ব প্রতীক নেই। এবার নির্দল প্রার্থী হলে তৃণমূল প্রার্থী বিরোধী ভোট এক জায়গায় জড়ো করা সহজ হবে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, “এগরায় নির্দল প্রার্থী দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ডিএসপি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সম্মতিও দিয়েছে। শুধু প্রার্থী চূড়ান্ত করাই বাকি। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল ভোট কেন্দ্রীভূত করতেই এই সিদ্ধান্ত।”
সিপিএমের এই দাবি মানতে রাজি নয় ডিএসপি। দলের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধচন্দ্র সিংহ স্পষ্টই বলেন, ‘‘এগরা কেন্দ্রে আমাদের দলীয় প্রার্থীই থাকবেন। রাজ্য বামফ্রন্টে এটাই চূড়ান্ত হয়েছে। প্রার্থী কে হবেন তা রবিবার চূড়ান্ত করা হবে। সিপিএমের দাবি সঠিক নয়।” এই দাবির পিছনে তাঁদের যুক্তি, রাজ্যে বরাবরই ডিএসপি দলের তিনটি আসন ছিল পিংলা, এগরা ও বড়বাজার। কিন্তু জোটের স্বার্থে গতবার বড়বাজার আসনটি তাঁরা ছেড়ে দিয়েছেন আরজেডিকে। বাকি দু’টি আসনে দলীয় প্রার্থী না থাকলে তাঁদের দলের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে যাবে।
আসন নিয়ে এমন জটিলতায় কিছুটা ক্ষুব্ধ কংগ্রেসও। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস কর মহাপাত্র বলেন, “আসন বন্টন নিয়ে বামফ্রন্ট একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এগরায় বামেরা দলীয় প্রার্থী দিলে তারাই প্রার্থী নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু নির্দল প্রার্থী হলে সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের বক্তব্য থাকবে।”
রবিবার কলকাতায় রয়েছে বামফ্রন্টের বৈঠক। সেখান থেকেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে বলে দাবি প্রবোধবাবুর। সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন তৃণমূল বিরোধী মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy