Advertisement
E-Paper

পড়ুয়া নেই, পঞ্চম শ্রেণিতে সংশয় বহু প্রাথমিকে   

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি  হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি চালুর ঘোষণা হয়েছিল আগেই। চলতি শিক্ষাবর্ষে পূর্ব মেদিনীপুরে ১৩৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সব প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মধ্যে অনেকগুলিতেই পঞ্চম শ্রেণি চালুর ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীসঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ওই সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধানশিক্ষক-শিক্ষিকারা পঞ্চম শ্রেণি চালু নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।

পঞ্চমশ্রেণির অনুমোদন পাওয়া নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ, চতুর্থশ্রেণি থেকে পঞ্চমশ্রেণিতে উন্নীত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের একাংশ ছেলে-মেয়েদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবর্তে হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তিতে আগ্রহী। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলতি বছরে পঞ্চম শ্রেণি চালুর অনুমোদন দেওয়া হলেও ক্লাস চালু করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

ভগবানপুর-১ ব্লকে তালদা আত্যয়িক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোকুল মুড়া বলেন, ‘‘এ বার বিদ্যালয়ে পঞ্চমশ্রেণি চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৪ জন পড়ুয়াকে তাদের অভিভাবকেরা হাইস্কুলে ভর্তির জন্য আমাদের কাছ থেকে শংসাপত্র নিয়ে গিয়েছেন। ফলে বিদ্যালয়ে এ বছর পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চালু করতে পারব কিনা সংশয়ে আছি।’’ কোলাঘাট ব্লকের জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক সুবল সামন্ত বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ে এ বছর ১৭ জন পড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের এখানে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য অভিভাবকদের বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবারই ১০ জন পড়ুয়া ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ নিয়ে গিয়েছে হাইস্কুলে ভর্তির জন্য। ফলে আমরা পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চালু করতে পারব কিনা চিন্তায় পড়েছি।’’

নন্দকুমারের আলাশুলি গোরাচাঁদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ ভৌমিক বলেন, ‘‘পঞ্চম শ্রেণি চালু হওয়ায় অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে উত্তীর্ণ ১৭ জন পড়ুয়াকেই এখানে ভর্তির জন্য বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ অভিভাবকই ছেলেমেয়েদের এখানে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করতে নারাজ। তাঁরা হাইস্কুলে ছেলেমেয়েকে ভর্তি করতে ‘ট্রান্সফার সার্টিফিকেট’ চাইছেন। এই অবস্থায় বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী কী ভাবে চালু করব! প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতিকে সমস্যা জানিয়েছি।’’ ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ থাকলেও ছেলেমেয়েকে ভর্তি না করা নিয়ে এক অভিভাবক হিরণ্ময় মাইতি বলেন, ‘‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি চালু হচ্ছে এটা আগে জানতে পারিনি। তাই ছেলেকে কাছে হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আগেই আবেদন জানিয়ে রেখেছিলাম। সেখানেই ভর্তি করেছি।’’

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাউ-এর অভিযোগ, ‘‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি চালু নিয়ে রাজ্য সরকার অনেক আগে ঘোষণা করলেও চলতি বছরে শিক্ষাবর্ষ শুরুর কিছুদিন আগে শিক্ষা দফতর বিদ্যালয়ের তালিকা-সহ অনুমোদন দিয়েছে। ফলে অভিভাবকদের আগে থেকে জানানোর ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সমস্যায় পড়েছেন। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকের অভাব থাকায় অভিভাবকরা ভরসা পাচ্ছেন না। তাই পড়ুয়া পাওয়া নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।’’

সমস্যার কথা মানলেও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানস দাসের দাবি, ‘‘প্রথম বছর পঞ্চমশ্রেণি চালু হওয়ায় কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এরকম সমস্যা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পঞ্চমশ্রেণির ক্লাস চালু হয়েছে।’’

Primary School Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy