ম্যাজিকের মাধ্যমের প্রচার। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের হাটে-বাজারে, স্কুল চত্বরে জাদুকরের হাতের খালি কৌটো থেকে চোখের নিমেষে বেরিয়ে পড়ছে মশারি। ‘ছোট কামড়, বড় বিপদ’ থেকে বাঁচতে হলে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর আবেদন জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের জাদুকর বি এন ঘোষ। ডেঙ্গি ঠেকাতে সচেতনতা বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। মশা থেকে বাঁচতে কী করা উচিত, আর কোনটা করা ঠিক নয়, তা জানাতে দেখানো হচ্ছে ম্যাজিক।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জামবনি ব্লকে ডেঙ্গিতে এক মহিলার মৃত্যুর পরে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্যজেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “ডেঙ্গি নিয়ে সচেতন করার জন্য ম্যাজিক-প্রচার শুরু হয়েছে। এর ফলে সচেতনতার কাজটা অনেক সহজ হচ্ছে।” বৃহস্পতিবার শালবনি ব্লক-সহ জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় ম্যাজিকের মাধ্যমে প্রচার হয়। শুক্রবার চন্দ্রকোনা-১ ও ঘাটালের বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায় ম্যাজিক শোয়ের মাধ্যমে পড়ুয়াদের সচেতন করা হয়।
স্কুলে স্কুলেও দেখানো হচ্ছে ম্যাজিক। ‘ওয়াটার অব ইন্ডিয়া’র আদলে একটি কলসি উপুড় করে জল বের করে দিচ্ছেন জাদুকর। তারপর খালি কলসি ফের উপুড় করতেই ম্যাজিকের কৌশলে ঝর ঝর করে জল বেরোচ্ছে। দর্শকদের প্রবল হাততালির মাঝে জাদুকর জানাচ্ছেন, এ ভাবেই বৃষ্টির জমা জল ফেলে দিতে হবে। নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। ম্যাজিকে তুড়ি মেরে জাদুকর প্রচারপত্রও হাজির করছেন। তাতে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গির সাধারণ লক্ষ্মণ, চিকিৎসা ও সমাধানের কথা লেখা রয়েছে। সবশেষে ম্যাজিকের মাধ্যমে হাজির হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের ব্যানার, “ডেঙ্গি হোক পরাজিত, ভবিষ্যৎ হোক সুরক্ষিত।”
মশা থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্য দফতর প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মেডিকেটেড মশারি বিলি করে থাকে। কিন্তু সেই সব মশারি দিয়ে অনেক বাসিন্দা মাছ ধরেন। বেগুন খেতে পোকার আক্রমণ ঠেকাতে মশারি টাঙানো হয়। মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর অভ্যাস ভুলতে বসেছেন শহরবাসীও। স্কুলে ম্যাজিক দেখানোর সময় জাদুকর পড়ুয়াদের বলছেন, ‘বাবা-মাকে বলবে, মশা থেকে বাঁচার জন্য মশারি। ইলেকট্রিক তেলপাত্র জ্বালালেও মশারি টাঙিয়ে ঘুমোতে হবে। মশারিতে ফুটো থাকলে সেগুলো সারিয়ে ফেলতে হবে। মশারিকে অন্য কাজে ব্যবহার করতে দিও না।’
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, মশারি ব্যবহার বেশি নিরাপদ। বর্ষায় জমে থাকা পরিষ্কার জলে এডিস ইজিপটাই মশার লার্ভা জন্মায়। সেই কারণে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত অসুখ সম্পর্কে এলাকাবাসীকে সচেতন করার জন্য জাদুপ্রদর্শনীকে হাতিয়ার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy