খড়্গপুর শহরে একে একে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। সরকারি হিসেবে, শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১০ জন। আর বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা আরও বেশি। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়েও অনেকে হাসপাতালে ভর্তি। ডেঙ্গি রোধে মশা নিধনে অভিযানে নেমেছে খড়্গপুর পুরসভা। শহরের রাস্তায় ঘুরলে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। রাস্তার ধারেই যত্রতত্র স্তূপীকৃত আবর্জনা। নালাতেও সাফাইয়ের বালাই নেই।
পুরসভার দাবি, মশা নিধনে কাউন্সিলরদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে শ্রমিক নিয়োগের জন্য কর্মনিযুক্তি প্রকল্পে ওয়ার্ড প্রতি ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টাকা বরাদ্দ হলেও বাস্তবে সে ভাবে কাজ এগোচ্ছে না বলে শহরের বাসিন্দাদের দাবি। খড়্গপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক শিশুর মা মুনমুন সিংহের অভিযোগ, “আমার ছেলে সবে সুস্থ হয়ে বাড়িতে এসেছে। চারিদিকে আবর্জনা, জল জমে রয়েছে। কাউন্সিলর ব্যবস্থা নেন না।”
অবস্থা আরও খারাপ শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় জনহিত ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় ইতিমধ্যে ৬ জন ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন। আক্রান্ত পরিবারের সদস্য দিলীপকুমার দাস, অঞ্জলি শীলরা বলছেন, “এলাকার কাউন্সিলর কোনও কাজ করছেন না। মশা মারার তেল স্প্রে করা, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, ধোঁয়া দেওয়ার কাজ কিছুই হয়নি।” ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ কুণ্ডু অবশ্য কাজ না হওয়ার জন্য পুরসভার ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন। তাঁর দাবি, “পুরসভা থেকে মশা মারার তেল পাননি। আবর্জনা বয়ে নিয়ে যাওয়ার গাড়ি ভেঙে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভা থেকে গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। শীঘ্রই সাফাইয়ের কাজ হবে।” মশা নিধনে শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সে ভাবে কাজ হচ্ছে না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মশা নিধনে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করছেন এলাকার বাসিন্দা সর্বাণী ভৌমিক, রূপালী পালইরা।
পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের পুর পারিষদ বেলারানি অধিকারী অবশ্য বলছেন, “সব ওয়ার্ডে কাজ চলছে। সঙ্গে চলছে অভিযানও।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সাফাই অভিযানের কাজে কাউন্সিলরদের নজরদারি প্রয়োজন।”
পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বেশি সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করে নর্দমা সাফাই, আবর্জনা পরিষ্কার, তেল স্প্রে, আগাছা কাটার কাজ চলছে। যদিও শহরের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অভিযান ঢিমেতালে চলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ছে। এ বিষয়ে খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলছেন, “ডেঙ্গি রোধে কেন্দ্রীয়ভাবে ওয়ার্ড ভিত্তিক অভিযান শুরু করেছি। অভিযানের জন্য ওয়ার্ডগুলিতে ১৫-২০ জন করে শ্রমিক দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অভিযান শুরুর আগে পর্যন্ত কাউন্সিলরদের এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy