টিভিতে খবরটা দেখে আর দেরি করেননি তিনি। কলকাতায় নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ার খবর পেয়েই পরিচিত সমস্ত ব্যবসায়ীকে ফোন করতে শুরু করেন মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায়। তাঁর কথায়, ‘‘টিভিতে দেখেই বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল। তারপরেই পরিচিতদের ফোন করে জানার চেষ্টা করেছি, কেউ দুর্ঘটনায় পড়েছেন কি না। তবে সব ঠিক আছে, এটাই স্বস্তির।’’
এ দিন ব্যবসার কাজে কলকাতায় গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের বড় বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী অশোক তাপাড়িয়ার ভাইপো। খবর শুনেই ভাইপোকে ফোন করেন অশোকবাবু। ভাইপো ঠিক আছে বলেই জানায়। তবু সে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত যেন শান্তি হচ্ছে না। অশোকবাবুর কথায়, ‘‘ব্যবসার কাজে ওকে প্রায়ই ওই এলাকায় যেতে হয়। ভয় হচ্ছিল।”
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কলকাতার গণেশ টকিজের কাছে নির্মীয়মাণ বিবেকানন্দ উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েন বহু মানুষ। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, কেশিয়ারি ও খড়্গপুর গ্রামীণে নির্বাচনী সভা করার কথা ছিল তৃণমূল নেত্রীর। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন।
বৃহস্পতিবার জেলার একাধিক বাজার বন্ধ থাকে। এ দিন মেদিনীপুরের বড়বাজারের মতো রেলশহরের গোলবাজারেরও ঝাঁপ বন্ধ ছিল। ফলে সপ্তাহের এই দিনটিতে জেলার অনেক ব্যবসায়ীই কেনাকাটার কাজে কলকাতায় আসেন। তাই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া প্রিয়জনের খোঁজে ফোন করতে শুরু করেন একাধিক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী পরিমল রায়ের কথায়, “আমি প্রায়ই বৃহস্পতিবার কলকাতায় কেনাকাটা করতে যাই। ওই এলাকা দিয়েও যেতে হয়। আজ যাইনি!”
মেদিনীপুরে রাঙামাটি উড়ালপুলের নীচে রুটি-তরকার দোকান রয়েছে পিন্টুর। ঘটনার ভয়াবহতা দেখে শিউড়ে ওঠেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘টিভির পর্দায় সবকিছু দেখে মনে হচ্ছিল, মেদিনীপুরেও যদি কখনও এমনটা হয়! তখন কি হবে!” শুধু পিন্টু নয়, এই উড়ালপুলের নীচে বহু অস্থায়ী দোকান।
উড়ালপুলের নীচে চায়ের দোকান রয়েছে তরুণ বিশ্বাসের। তিনি বলেন, “উড়ালপুল ভেঙে পড়বে, ভাবা যায় না! দিনের বেশির ভাগ সময় এখানে থাকি। তাই মনে একটা ভয় হচ্ছেই!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy