Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বিধায়ক তহবিলের টাকায় শালবনিতে হচ্ছে কমিউনিটি রেডিও সেন্টার

বাজার থেকে ঝড়-বৃষ্টি, চাষি পাবেন পূর্বাভাস

ফসল ফলানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাজারের হালহকিকত জানেন না চাষি। এমনকী আগামী ক’দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, সেই তথ্যও থাকে না চাষির কাছে।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

ফসল ফলানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাজারের হালহকিকত জানেন না চাষি। এমনকী আগামী ক’দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, সেই তথ্যও থাকে না চাষির কাছে।

প্রত্যন্ত এলাকায় এই ছবি নতুন নয়। তবে এই সব সমস্যা থেকে এ বার মুক্তি পেতে চলেছেন শালবনির চাষিরা। সৌজন্যে কমিউনিটি রেডিও সেন্টার। এটি তৈরি হলে শুধু চাষের প্রয়োজনীয় বাজার বা আবহাওয়ার খবর নয়, সমাজ-সংস্কৃতি-নানা শিক্ষামূলক বিষয় সম্পর্কেও জানতে পারবেন গ্রামবাসী। শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকাতেই এই সেন্টার গড়ে উঠবে। ইতিমধ্যে বিধায়কের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জেলা প্রশাসন। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্তবাবু বলেন, ‘‘রেডিও সেন্টার চালু হলে গ্রামবাসীই উপকৃত হবেন। তাঁরা অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তারও বলেন, “রেডিও চালু হলে চাষি খেতে কাজ করতে করতে নানা খবরাখবর পেয়ে যাবেন।”

রাজ্যে প্রথম কমিউনিটি রেডিও সেন্টার চালু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সালে। দিন দিন এই প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সাধারণত, যাঁরা শ্রোতা তাঁরাই এখানে পরিবেশিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ফলে, অনুষ্ঠানগুলো সহজেই এলাকাবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। এফএম ব্যান্ডে অনুষ্ঠান প্রচারিত হওয়ায় শ্রবণমানও খুব উন্নতমানের হয়।

সব মিলিয়ে এই কমিউনিটি রেডিও সেন্টার নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহী শালবনির মানুষ। এলাকার চাষি অজয় মাহাতো, বংশী মাহাতোরা বলেন, “এখানে রেডিও সেন্টার হলে ভালই হবে। এলাকার খবরাখবর পাওয়া যাবে। চাষের কাজেও সুবিধে হবে। কবে ভারী বৃষ্টি হবে, কবে চড়া রোদ উঠবে, এ সব আগে থেকে বোঝা যায় না। আবহাওয়ার আগাম খবর তেমন পাই না। রেডিও সেন্টার চালু হলে অন্তত এই খবরগুলো পাব।’’ মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়া, ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরীও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন। বলছেন, “আজকের দিনে কমিউনিটি রেডিও সেন্টারের গুরুত্ব অসীম। এটা তো প্রচারের একটা
বড় মাধ্যমও।”

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, শালবনির খাদিবাঁধে গড়ে উঠবে এই কমিউনিটি রেডিও সেন্টার। ব্যয় হবে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, খাদিবাঁধে রেডিও সেন্টার হলে পরবর্তী সময় শক্তিশালী ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে এলাকা বিস্তৃত করা যেতে পারে। গত জুলাই মাসে জেলার সব বিধায়ককে প্রকল্প জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন এলাকা উন্নয়ন তহবিলে বিধায়কদের জন্য বছরে ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। জেলায় ১৯ জন বিধায়ক। আপাতত, ৩০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। নিয়মমতো বছরে যে ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়, তার ৩০ শতাংশ খরচ হলে তবেই পরের ধাপের টাকা পান একজন বিধায়ক। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জুলাইতেই জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক সুমন্ত রায়ের দফতরে প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দেন শালবনির বিধায়ক। লিখিত ভাবেই জানান, তিনি কমিউনিটি রেডিও সেন্টার গড়ার জন্য বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ দিতে চান। জেলা পরিকল্পনা দফতর থেকে প্রস্তাব পৌঁছয় জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার দফতরে। প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

এখন প্রকল্প কবে রূপায়িত হয়, সে দিকেই তাকিয়ে শালবনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Radio
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE