Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নোটের ধাক্কায় ফাঁকা মেলা

নোটের চোটে পকেট ফাঁকা! ফাঁকা সবলা মেলার মাঠও! শেষ কবে মেদিনীপুরের কোনও মেলায় এত কম ভিড় দেখেছেন মনে করতে পারছেন না প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু, সৌম্য দাসরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সবলা মেলা প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল।

ফাঁকা সবলা মেলা প্রাঙ্গণ। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র।

ফাঁকা সবলা মেলা প্রাঙ্গণ। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৩৯
Share: Save:

নোটের চোটে পকেট ফাঁকা! ফাঁকা সবলা মেলার মাঠও!

শেষ কবে মেদিনীপুরের কোনও মেলায় এত কম ভিড় দেখেছেন মনে করতে পারছেন না প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু, সৌম্য দাসরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সবলা মেলা প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। মঞ্চের সামনেও হাতে গোনা লোকের ভিড়। প্রিয়াঙ্কা বলছিলেন, “কেনাকাটা করতে আসিনি! শুনেছিলাম এ দিন বাউল গান হবে। সেই গান শুনতেই এসেছি!” তাঁর কথায়, “এখন নগদের যা আকাল! কেনাকাটা করব কী ভাবে!” সৌম্যর কথায়, “এখন খুচরোর বেশ অভাব! ইচ্ছে থাকলেও কেনাকাটা করার উপায় নেই! শহরে মেলা চলছে। তাই একবার ঘুরতে এসেছি!”

বৃহস্পতিবার থেকে মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর হলের মাঠে শুরু হয়েছে সবলা মেলা। চলবে আগামী বুধবার পর্যন্ত। এখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যের স্টল রয়েছে। গত বছর সবলা মেলায় ৩৫টি স্টল ছিল। এ বার স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। সবমিলিয়ে ৪৩টি স্টল রয়েছে। অবশ্য মেলার ভিড় বাড়েনি! বরং অনেক কমেছে।

ফাঁকা মেলায় হাসি নেই বিক্রেতাদের মুখেও। মেলায় স্টল দিয়েছেন শিবানী মণ্ডল। তাঁর স্টলে বাঁশের তৈরি নানা জিনিস রয়েছে। শিবানীদেবী বলছিলেন, “এ বার মেলায় খদ্দের খুব কম। তেমন লোক কই!” মেলায় ধূপকাঠির স্টল দিয়েছেন রেবতী মাহাতো। তিনি বলেন, “অন্যবার বেশ ভিড় থাকে। এ বার তেমন ভিড়ই নেই! জানি না কেমন ব্যবসা হবে!”

দোকানদাররা পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোট নিচ্ছেন না। মন্দা ব্যবসাতেও। মেলার এক দোকানদার মানছেন, “নোট বদলের ঝক্কি এড়াতেই পুরনো নোট নেওয়া হচ্ছে না।” তাঁর কথায়, “পুরনো নোট চালাব কী করে!” অচল নোটের জেরে কেনাকাটা কমে গিয়েছে। গতবার এই মেলায় প্রায় ৪ লক্ষ টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছিল। এক-একটি স্টল ১৪-১৮ হাজার টাকার সামগ্রী বিক্রি করেছিলাম। এ বার? এক দোকানদার বলছিলেন, “এ বার ব্যবসা মার খাচ্ছে। লোকজনই বেশি আসছেন না। যাঁরা আসছেন, তাঁদের সকলে কেনাকাটা করছেন না। শুধু মেলা ঘুরে চলে যাচ্ছেন! ব্যবসা হবে কী ভাবে!”

জেলা প্রশাসনের এক কর্তাও মানছেন, “নগদের টানে এ বার মেলায় ভিড় কমই হচ্ছে। ক্রেতা, বিক্রেতা কারও কাছে বেশি খুচরো নেই। হাতে যে টুকু নগদ টাকা রয়েছে তা প্রায় কেউই তড়িঘড়ি খরচ করতে চাইছেন না।’’ মেলায় ভিড় টানতে অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি প্রশাসন! সাংস্কৃতিক মঞ্চে প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে নানা অনুষ্ঠান। সঙ্গীত, নৃত্য প্রভৃতি। তাতেও অবশ্য মেলার মাঠ ভরছে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Money Fair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE