হাসপাতাল হোক বা ব্লাড ব্যাঙ্ক, রক্তের সঙ্কট চেনা ছবি। স্বেচ্ছায় রক্তদান ছাড়া এই সঙ্কট কাটানোর অন্য রাস্তা নেই। বিভিন্ন ক্লাব, রাজনৈতিক দল রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। কিন্তু যাদের এই বিষয়টিতে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা, সেই স্বাস্থ্য দফতরই উদাসীন বলে অভিযোগ।
রক্তদান করলে সরকারি সিলমোহর দেওয়া শংসাপত্র পান রক্তদাতারা। শিবিরের আয়োজক সংস্থাও পায় শংসাপত্র। সেই সঙ্গে রক্তদাতা পিছু টিফিন খরচ বাবদ ২৫ টাকা করে দেওয়া হয় আয়োজক সংস্থাকে। কিন্তু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে কিছুদিন যাবৎ সে সব কিছুই মিলছে না। রক্ত দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে, ‘ডিউ স্লিপ’। জানানো হচ্ছে, টিফিনের খরচ ও শংসাপত্র পরে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, রক্তদানের পরে রক্তদাতাদের রক্তের গ্রপ জানানোর কথা, সেটাও জানানো হচ্ছে না। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, প্রায় ৬ মাস ধরে প্রিন্টার খারাপ। ফলে, রক্তদাতাদের গ্রুপ জানানো যায়নি।
পশ্চিম মেদিনীপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের মতে, স্বেচ্ছায় রক্তদান নিয়ে মানুষ এখন আগের তুলনায় অনেক সচেতন। কিন্তু রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে, কিছু এমন অনেক সংস্থা রয়েছে যাদের রক্তদাতাদের টিফিন খরচ জোটানোটাও কঠিন। ফলে, প্রাপ্য টাকা না পাওয়ায় শিবিরের উৎসাহ কমছে। পশ্চিম মেদিনীপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সভাপতি অসীম ধর বলেন, “টিফিন খরচের টাকার সঙ্গে নিজেরা চেয়েচিন্তে আরও কয়েক হাজার টাকা জোগাড় করে অনেকে শিবিরের আয়োজন করেন। টাকা না পেলে এঁদের পক্ষে শিবির করা কঠিন। তাছাড়া হাতে হাতে শংসাপত্র না পেলে রক্তদানে উৎসাহ হারানোর ভয় থাকে।”
এক সময় রক্তদাতাদের অশোকস্তম্ভ উৎকীর্ণ ব্যাজ দিত সরকার। তা পাওয়ার আগ্রহও থাকত। কিন্তু বছর কয়েক হল, সেই ব্যাজও দেওয়া হচ্ছে না। সব মিলিয়ে রক্তদান শিবিরে আগ্রহ কমছে। অন্য কিছু সমস্যাতেও বাধা পাচ্ছে রক্তদান শিবির। অসীমবাবু বলেন, “সমস্যার কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কারণ, জেলায় আমরাই তো সব থেকে বেশি শিবির করি।”
জানা গিয়েছে, চলতি বছরে জেলায় ২১৭টি শিবির হয়েছে। তার মধ্যে ১৬২টি শিবিরই হয়েছে ফোরামের প্রচেষ্টায়। সম্প্রতি শালবনির এক কারখানায় শিবির হয় আইএনটিটিইউসি-র উদ্যোগে। কিন্তু সেখানেও সেই শংসাপত্র সঙ্কট। আইএনটিটিইউসি-র জেলা কার্যকরী সভাপতি শশধর পলমল বলেন, “শংসাপত্র পরে দেবে বলে জানিয়েছে।” মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার অবশ্য বক্তব্য, “এ রকম সমস্যার কথা আমাকে কেউ জানাননি। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy