Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ঝাড়গ্রামে রাজ সন্দর্শন, সুযোগ মিলবে বড়দিনের প্রাক্-সন্ধ্যায়

এই প্রথমবার রাজ পরিবারের সদস্যরা রাজবেশে পর্যটকদের সামনে হাজির হবেন। রাজস্থানে এ ভাবে রাজবেশে রাজ পরিবারের সদস্যরা পর্যটকদের সঙ্গে দেখা করেন। ২৪ ডিসেম্বর বড়দিনের প্রাক্-সন্ধ্যায় রাজপুরুষদের সঙ্গে আলাপচারিতার আয়োজনও থাকছে পর্যটকদের জন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

শীত সন্ধ্যায় রাজস্থানের আদলে এ বার ঝাড়গ্রামে রাজপ্রাসাদের প্রাঙ্গণে পর্যটকদের রাজদর্শন!

ঝাড়গ্রামে ‘উইন্টার ইভিনিং’-এ পর্যটকদের জন্য এমনই সুযোগ করে দিচ্ছে ঝাড়গ্রামের একটি পর্যটন সংস্থা। ২০১৪ সাল থেকে ঝাড়গ্রামের পর্যটন প্রসারে শীতের মরসুমে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে জঙ্গলমহলের এই পর্যটন সংস্থাটি। অনুষ্ঠানের জৌলুস বাড়তে ঝাড়গ্রামের মল্লদেব রাজ পরিবারের পুরুষ সদস্যদের রাজবেশে হাজির করানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন রাজ পরিবার।

এই প্রথমবার রাজ পরিবারের সদস্যরা রাজবেশে পর্যটকদের সামনে হাজির হবেন। রাজস্থানে এ ভাবে রাজবেশে রাজ পরিবারের সদস্যরা পর্যটকদের সঙ্গে দেখা করেন। ২৪ ডিসেম্বর বড়দিনের প্রাক্-সন্ধ্যায় রাজপুরুষদের সঙ্গে আলাপচারিতার আয়োজনও থাকছে পর্যটকদের জন্য।

অনুষ্ঠানের মূল পরিকল্পনায় রয়েছেন রাজপরিবারের তরুণ সদস্য বিক্রমাদিত্য মল্লদেব। ইতালি থেকে এমবিএ পাশ করে আসা বিক্রম নিজেও পর্যটন প্রসারের কাজে যুক্ত।

তবে এই প্রথম নয়। ঝাড়গ্রামের পর্যটন সংস্থার উদ্যোগে ‘উইন্টার ইভিনিং’ অনুষ্ঠানে প্রতিবারই কোনও না কোনও অভিনবত্ব থাকে। ধমসা-মাদলের তালে লোকনৃত্য ও ঝুমুর গান অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য। লণ্ঠনের আলোয় এ বার রাজবাড়ির সদস্যরা রাজবেশে হাজির হবে।

পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত বলেন, “পর্যটকদের কাছে ঝাড়গ্রাম-সফর স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। পর্যটকরা ফিরে গিয়ে অন্যদেরও ঝাড়গ্রামের আসার ব্যাপারে উৎসাহিত করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

এমনিতেই শীতকাল ঝাড়গ্রামে পর্যটনের সেরা সময়। এ বছর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কোনও লজ-হোটেলে ঘর খালি নেই।

২০১৪ সালে প্রথম উইন্টার ইভিনিং-এর অনুষ্ঠান হয়েছিল ঝাড়গ্রাম রাজপ্রাসাদ প্রাঙ্গণে। পরের দু’টি বছর অবশ্য রবীন্দ্রপার্কে এই অনুষ্ঠান হয়েছিল। এ বার রাজ পরিবারের সহযোগিতায় চতুর্থ বর্ষের অনুষ্ঠানটি হচ্ছে ফের রাজপ্রাসাদ প্রাঙ্গণে।

আনুমানিক ১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে রাজপুতানার সর্বেশ্বর সিংহ চৌহান ঝাড়গ্রামের রাজা হন। তিনি মল্লদেব উপাধি নেন। পরবর্তী চারশো বছরে মল্লদেব বংশের ১৮ জন রাজা ঝাড়গ্রাম এস্টেটের রাজকার্য পরিচালনা করেন।

শেষ রাজা ও ঝাড়গ্রামের প্রথম সাংসদ সর্বেশ্বর মল্লদেবের রাজত্বকালকে ঝাড়গ্রামের শিক্ষা ও সংস্কৃতির সুবর্ণযুগ বলা হয়। তিরিশের দশকে ইসলাম-গথিক রীতিতে নতুন প্রাসাদ গড়ে তোলেন নরসিংহ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে জমিদারি উচ্ছেদ আইন বলবৎ হয়।

রাজত্ব চলে গেলেও নরসিংহ এবং তাঁর পুত্র ‘যুবরাজ’ বীরেন্দ্রবিজয় আমৃত্যু রাজসম্মান পেয়েছেন। এখন রাজপ্রাসাদের বাসিন্দা শেষ রাজা নরসিংহের দুই নাতি শিবেন্দ্রবিজয় ও জয়দীপ মল্লদেব এবং তাঁদের পরিবার-পরিজন।

ঝাড়গ্রামের বর্তমান পুরপ্রধান শিবেন্দ্রবিজয় অবশ্য দুর্গেশ নামে বেশি পরিচিত। দুর্গেবাবুর ভাই জয়দীপ মল্লদেব বলেন, “এই প্রথমবার আমার ভাইপো বিক্রমাদিত্যের পরিকল্পনায় রাজপরিবারের কয়েকজন পুরুষ সদস্য রাজবেশে পর্যটকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Palace Toursists Tourist Spot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE