Advertisement
০৩ মে ২০২৪

অভিভাবকদের বিক্ষোভ স্কুলে

পড়ুয়াদের পরে এ বার অভিভাবকরা। একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রধান শিক্ষককে রীতিমতো তালাবন্দি করে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ হয়েছে খড়্গপুর শহরের সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে।

চড়াও: সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে ঘেরাও। নিজস্ব চিত্র

চড়াও: সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে ঘেরাও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০০:১৭
Share: Save:

পড়ুয়াদের পরে এ বার অভিভাবকরা। একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রধান শিক্ষককে রীতিমতো তালাবন্দি করে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ হয়েছে খড়্গপুর শহরের সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে।

একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় কলা বিভাগের অধিকাংশ পড়ুয়াই অকৃতকার্য হয়েছে। কেউ এক, কেউ একাধিক বিষয়ে। স্কুল শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকজনকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করলেও ২৭জনকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই অকৃতকার্যরা পড়ুয়ারা গত ৬ মে প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করে এক প্রস্ত বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাতে নরম হননি। তাই এ দিন প্রধান শিক্ষকের অফিসঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন অভিভাবকেরা। পুলিশ এসেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছিল কলা বিভাগের শ’খানেক পড়ুয়া। অধিকাংশ পড়ুয়াই বেশ একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। স্কুলের শিক্ষা কমিটি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, যারা সর্বাধিক তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে তাদের দ্বাদশ শ্রেণিতে তুলে দেওয়া হবে। তার পরেও ২৭জন অকৃতকার্য থেকে গিয়েছে। এই সিদ্ধান্তেই চটেছেন অভিভাবকেরা। এক অকৃতকার্য ছাত্রের অভিভাবক ভবানীপুরের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মীন্দর রায় বলেন, “তিনটি বিষয়ে ফেল করেও বহু ছাত্র নতুন ক্লাসে উঠে গেল। আর আমাদের ছেলেরা চারটি বিষয়ে ফেল করায় ক্লাসে উঠতে পারল না। এ রকম সিদ্ধান্ত কী ভাবে স্কুল নিতে পারে!” স্কুল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফল চলে গিয়েছে। এখন নতুন করে কাউকে পাশ করানোর ক্ষমতা স্কুলের নেই।

এ দিন অভিভাবকদের ঘেরাও বিক্ষোভে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আটকে পড়ায় ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে শেষে ফিরে যায় পুলিশ। অকৃতকার্য পড়ুয়ার অভিভাবক মধুসূদন রায়, সন্ধ্যা ভুঁইয়াদের অভিযোগ, “এই প্রধান শিক্ষক সারা বছর ছাত্র ও আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কোনও ছাত্র কিছু বলতে এলেই মেজাজ চড়িয়ে কথা বলেন। এখানে শিক্ষার পরিবেশ ভাল হবে কী ভাবে! তাই প্রধান শিক্ষককে তালাবন্ধ করে দিয়েছি।”

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিতিকন্ঠ দে বলেন, “একাদশের ফল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে চলে গিয়েছে। আমাদের হাতে কিছু নেই। তাও আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। পুলিশ ব্যবস্থা না নিয়ে চলে যাচ্ছে। কোন রাজ্যে বাস করছি।”

পরে অবশ্য পরিচালন সমিতি বৈঠকে বসে তালা খোলার ব্যবস্থা করে। আর পুলিশের স্কুলে গিয়েও ফিরে আসা প্রসঙ্গে খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডলের বক্তব্য, “কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশি হস্তক্ষেপ করতে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিতে রাজি হননি।”

চড়াও: সিলভার জুবিলি হাইস্কুলে ঘেরাও। নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education School High School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE