নিরঞ্জন বেরা।—নিজস্ব চিত্র।
সিপিআই (এমএল) পিসিসি-এর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন বেরাকে আটক করে মুখ পুড়ল ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের। শেষ পর্যন্ত রবিবার নিরঞ্জনবাবুকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে পাঠিয়ে পুলিশের উদ্যোগে অভিযুক্তের জামিনের জন্য আইনজীবীর ব্যবস্থা করা হল। ৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনও পেয়ে গেলেন তিনি।
শুক্রবার রাতে নিরঞ্জনবাবুর ঘনিষ্ঠজনরা সংবাদমাধ্যমকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি এলাকার বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। অ্যারেস্ট মেমো ছাড়া নিরঞ্জনবাবুকে কেন ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ওই সময় জানতে চেয়েছিলেন তাঁর পরিজনরা। জবাব দেয় নি পুলিশ। শনিবার তাঁকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলাও হয় নি। নিরঞ্জনবাবুকে ধরার কথা অস্বীকার করেছিল পুলিশ। অথচ শুক্রবার রাত থেকে নিরঞ্জনবাবু যে, ঝাড়গ্রাম থানায় ছিলেন সেটা দেখেছেন অনেকেই।
বেআইনিভাবে নিরঞ্জনবাবুকে থানায় আটক করে রাখার প্রতিবাদে সোচ্চার হন সিপিআই (এমএল) পিসিসি-এর সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ রাণা। সংবাদমাধ্যমে বিবৃত্তি দিয়ে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের কড়া সমালোচনা করেন সন্তোষবাবু। তাঁর দাবি, “রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আগামী ১৭-১৯ অগস্ট ধর্মতলায় রাজ্যের ১৭টি বামপন্থী দলের তিন দিনের অবস্থান কর্মসূচি রয়েছে। ওই কর্মসূচিতে ঝাড়গ্রামের লোকজনকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংগঠিত করছিলেন নিরঞ্জনবাবু। সেই জন্যই তাঁকে আটক করা হয়।”
নিরঞ্জনবাবুর আটকের বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যম খোঁজ খবর শুরু করতেই, রবিবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানা যায়। এ দিন ঝাড়গ্রাম আদালতে নিরঞ্জনবাবুর আইনজীবী ও সংবাদমাধ্যমের লোকজন হাজির ছিলেন। কিন্তু দুপুরের দিকে হঠাত্ই জানা যায়, নিরঞ্জনবাবুকে নিয়ে পুলিশের গাড়ি মেদিনীপুরে রওনা দিয়েছে। পরে বিকাল তিনটে নাগাদ মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে নিরঞ্জনবাবুকে হাজির করা হয়। খবর পেয়ে আদালতে পৌঁছন সিপিআই (এমএল) পিসিসি-এর মেদিনীপুর শহর নেতা তপন মুখোপাধ্যায়। তপনবাবু বলেন, “পুলিশই অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী ঠিক করে দিয়েছে।”
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শনিবার দুপুরে ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি এলাকায় বেআইনি জমায়েত করে লোকজনকে ভয় দেখানোর অভিযোগে নিরঞ্জনবাবুকে ধরা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩ (বেআইনি জমায়েত), ৫০৪ (ধমক), ৫০৬ (ভয় দেখানো) এবং ১২০বি (ষড়যন্ত্র) ধারায় খোদ পুলিশই সুয়োমোটো অভিযোগ দায়ের করে মামলা রুজু করেছে।
অভিযুক্তের আইনজীবী দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “মামলাটি জামিনযোগ্য হওয়ায় নিরঞ্জনবাবু জামিন পেয়ে গিয়েছেন।” নিরঞ্জনবাবু ফোনে বলেন, “শুক্রবার পুলিশ এসে আমাকে থানায় নিয়ে গেলেন। আমাকে নিয়মিত খাবার ও পানীয় জল দেওয়া হয় নি।’’ প্রসঙ্গত, গত মে মাসে নিরঞ্জনবাবু-সহ তিনজনকে আটক করে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। মাস খানেক পরে তিনজনই জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। এ দিন অবশ্য নিরঞ্জনবাবুর প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করে নি পুলিশ। ফোন ধরেননি পুলিশ সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy