পলেস্তারা খসে মুখ দেখাচ্ছে রড। নিজস্ব চিত্র
পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে। বেরিয়ে গিয়েছে ভিতরের রডের কাঠামো। বর্ষার আগে সেতুর স্তম্ভের হাল ছিল এমনই। আর এখন সেই সেতুর নীচ দিয়েই বয়ে চলছে ভরা চম্পা নদী। সেতুর জরাজীর্ণ অবস্থায় শঙ্কিত এলাকাবাসী।
রামনগর-২ ব্লকের দক্ষিণ কানপুরের কাছে চম্পা নদীর উপরে রয়েছে ওই সেতু। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তা ‘মালি সেতু’ নামে পরিচিত। অনেকে ‘ঘণ্টি পুল’ও বলেন। স্থানীয়দের দাবি, ১৯৭২ সালে সেতুটি তৈরির পর সেটি এখনও পর্যন্ত একবারও সংস্কার হয়নি। অথচ কয়েক মাস আগে নদীতে যখন জল কম ছিল তখনই দেখা গিয়েছে, সেতুর পিলারের ভগ্নপ্রায় দশা।
সেতুর পূর্ব প্রান্তে রয়েছে দক্ষিণ কানপুর গ্রাম আর পশ্চিমে রয়েছে বাসুলিপাট। সেতুর পশ্চিমে রয়েছে রঘুনাথপুর ব্রজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। রয়েছে বাসুলিপুট প্রাথমিক বিদ্যালয়। আবার অন্য দিকে রয়েছে শ্যামপুর বাসুলি বিদ্যাভবন। বহু ছাত্র-ছাত্রীকে এই সেতু পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়। নরকুলি, তালকানপুর, উত্তর কানপুর গ্রামের বাসিন্দাদের রামনগর যাওয়ার জন্য এই সেতু ব্যবহার করতে হয়। এছাড়াও, থিয়ার, শ্যামপুর, রঘুনাথপুর, লছিমপুর প্রভৃতির গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের পথে ওই সেতু রয়েছে। সেতুটি দিয়ে বড় গাড়ি পারাপার হয় না। কিন্তু ইঞ্জিন রিকশা, টোটো এবং ছোট গাড়ি পারাপার হয়।
দক্ষিণ কানপুরের বাসিন্দা হৃষিকেশ প্রামাণিক বলেন, “সেতুর বয়স প্রায় ৪৬ বছর। একবারও সংস্কার হয়নি। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়েছে বলে আমরা এই সেতুর কথা বলছি, এমনটা নয়। এই সেতু সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে সংস্কার করলেও সেতু টিকবে কি না সন্দেহ।’’ আর এক বাসিন্দা অনুপম দাস বলেন, “প্রতিদিন এই সেতু পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু মোটর সাইকেল সেতুতে উঠলেই সেতুতে কম্পন শুরু হয়।’’
বর্ষার পরে বর্তমানে নদীতে জলের পরিমাণ বেশি। স্রোতও বেশি। ফলে ভাঙা পিলার আরও বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা। স্থানীয় বাসিন্দা সৌরভ প্রমাণিকের কথায়, “চম্পা নদীর জল বাড়ায় সেতুর স্তম্ভগুলি এখন জলের তলায়। ফলে বোঝার উপায় নেই যে, সেগুলির পরিস্থিতি কতটা খারাপ। মাস তিনেক আগে আমরা যে পরিস্থিতি দেখেছি, তাতে এত জলে যে কোনও সময় ভেঙে পড়বে হয়তো।’’
এ ব্যাপারে রামনগর-২ ব্লকের বিডিও মনোজ কাঞ্জিলাল বলেন, “সেতুটির ভগ্নপ্রায় অবস্থার কথা শুনেছি। সেতু পরিদর্শনে যাব। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy