বন্ধ: জলপ্রকল্পের জায়গায় চড়ছে ছাগল। নিজস্ব চিত্র
এক বছর ধরে পাম্প বিকল। সরকারি জলপ্রকল্পের জল থেকে বঞ্চিত ঝাড়গ্রামের নেকড়াডোবা গ্রামের তিনশো বাসিন্দা।
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নেকড়াডোবা গ্রামের ৫০টি পরিবারের সিংহভাগ বাসিন্দা আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। জঙ্গলমহলের অশান্তিপর্বে মাওবাদীদের মুক্তাঞ্চল ছিল এই এলাকা। সেই সময় বাম সরকারের বঞ্চনার অভিযোগে জনসাধারণের কমিটির মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন আবালবৃদ্ধবনিতা। রাজ্যে পালাবদলের পরেও অবশ্য বিশেষ বদল হয়নি।
গ্রামের নলকূপ থেকে জল ওঠে না। সরকারি পাতকুয়োর জলও পানের অযোগ্য। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। কিন্তু গরমে জলস্তর নেমে গেলে সেখানেও পাম্প থেকে জল ওঠে না। গ্রামবাসীর ভরসা বলতে স্থানীয় দুই বাসিন্দার ব্যক্তিগত পাতকুয়োর জল। গরমে সেই পাতকুয়োর জলস্তরও অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় সমস্যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে এখনও পাতকুয়োর জল পান করেই তেষ্টা মেটায় গ্রামবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রামে একটি জলপ্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। গত বছর মার্চে ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে অনগ্রসর এলাকা তহবিলের টাকায় জলপ্রকল্পটি তৈরি হয়। প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপের জল পাম্পে তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাস্তার ধারের ট্যাপ কলে সরবরাহ করার ব্যবস্থা হয়।
গত বছর প্রকল্পটি চালু হওয়ার মাস তিনেকের মধ্যেই সাব মার্সিবল পাম্পটি খারাপ হয়ে যায়। অভিযোগ, নিম্ন মানের পাম্প বসানোর জন্য সেটি কয়েক মাসের মধ্যে খারাপ হয়ে যায়। এরপর গ্রামবাসীরা পাম্পটি সারিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়মিত ব্লক অফিসে গিয়ে বিডিও-র কাছে দরবার করেছেন। লিখিত অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছেন। কিন্তু বছর গড়াতে চললেও পাম্পটি সারিয়ে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। গত বছর জুন মাস থেকে জল প্রকল্পটি অচল হয়ে পড়ে রয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী শালকান মাণ্ডি ও পেশায় চাষি রামচন্দ্র সরেন-এর বাড়ির উঠোনে দু’টি ব্যক্তিগত পাতকুয়ো রয়েছে। গ্রামবাসী সেই পাতকুয়োর জল সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। জলের অভাবে মিড-ডে মিল রান্নার কাজেও সমস্যা হয়।
নেকড়াডোবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যা ময়না সরেন, সুজাতা মাণ্ডিরা বলেন, “দূর থেকে জল বয়ে এনে মিড-ডে মিল রান্না ও বাসন মাজা-ধোওয়ার কাজ করতে হয়।” গ্রামবাসী মকর টুডু, বারি হাঁসদার অভিযোগ, “শহরের এত কাছে আমরা থাকি। অথচ তেষ্টার জলটুকুও আমরা পাচ্ছি না!”
এ বিষয়ে ঝাড়গ্রামের বিডিও সুদর্শন চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। দ্রুত সমস্যা মেটানোর জন্য পদক্ষেপ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy