E-Paper

ঝোঁক বেসরকারিতে, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে ক্রেতা কম

এগরা মহকুমা হাসপাতালে মূলত প্রসূতি ও শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে। এই মহকুমা ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ওড়িশা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন প্রসূতি ভর্তি হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৪
অপেক্ষা: ক্রেতার দেখা নেই। এগরার একটি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষা: ক্রেতার দেখা নেই। এগরার একটি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা পড়ে রয়েছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের শো-কেস। সে ভাবে ক্রেতা না যাওয়ায় দোকানের সামনে সার দিয়ে রাখা থাকে মোটর বাইক ও সাইকেল। বিক্রি না হওয়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নষ্ট করতে হয়। রোগীর পরিবারের আস্থা সেই বেসরকারি দোকানের ‘ব্র্যান্ড’এর ওষুধ।

রোগীর পরিবারের অর্থ সাশ্রয়ে রাজ্য সরকার সরকারি হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালু করেছে। রাজ্যের ১১৮টি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে গড়ে ৬৭ শতাংশ অবধি ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করা হয়। সরকারি ওই দোকানগুলোয় ১৪২ ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। এগরা মহকুমা হাসপাতালেও ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান রয়েছে। শুরুতে হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে রোগীরা ন্যায্য মূল্যের দোকানে ওষুধ কিনতেন। সময় যত গড়িয়েছে রোগীর পরিজনেরা ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থেকে মুখ ফিরিয়েছেন বলে দাবি।

এগরা মহকুমা হাসপাতালে মূলত প্রসূতি ও শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে। এই মহকুমা ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ওড়িশা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন প্রসূতি ভর্তি হন। হাসপাতালে চব্বিশ ঘণ্টা স্বাভাবিক ও শল্য চিকিৎসায় প্রসব করানো হয়। শিশুদের চিকিৎসার জন্য ওষুধের বেশি প্রয়োজন হয়। দু’বছর আগে পর্যন্ত ন্যায্য মূল্যের দোকানে গড়ে প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার টাকা ওষুধ-সহ চিকিৎসার সামগ্রী বিক্রি হত। দোকানে বর্তমানে চারজন কর্মী রয়েছে। করোনা অতিমারির পর থেকে বিক্রি তলানিতে পৌঁছেছে বলে দাবি। বিক্রি না হওয়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণ অনেক ওষুধ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাহিদা না থাকায় নতুন করে ওষুধ আমদানি করা হচ্ছে না। প্রসবের জন্য এখন কমবেশি ন্যাপকিন ও স্যানিটাইজ়ার এবং সামান্য কিছু ওষুধের বিক্রি হয় বলে খবর।

সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে এগরা হাসপাতালের রোগীর পরিবারেরা চিকিৎসকদের ‘ব্র্যান্ড’এর ওষুধ লিখে দেওয়ার অনুরোধ বেশি করছেন। ফলে চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশনের পরিবর্তে সাদা কাগজে ব্র্যান্ডের ওষুধ লিখতে বাধ্য হচ্ছেন। এত ছাড়ে ওষুধ পাওয়া সত্ত্বেও কেন বেসরকারি দোকানে ক্রেতাদের ঝোঁক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখন প্রতিদিন গড়ে ৫-৭ হাজার টাকা ওষুধ বিক্রি হয় এগরা মহকুমা হাসপাতালে থাকা ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে। দোকানে ক্রেতার চাপ না থাকায় কাউন্টারে বসে মোবাইল ফোন নিয়ে সময় কাটান কর্মচারীরা।

এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিয়মিত প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসকেরা ন্যায্য মূল্যের দোকানে পাওয়া যায় এমন জেনেরিক ওষুধের নাম লেখেন। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর পরিজনেরা সেই ওষুধের পরিবর্তে ব্র্যান্ডের ওষুধ লিখতে অনুরোধ করেন। কেন ন্যায্য মূল্যের দোকানে বিক্রি কমেছে বিষয়টি জানা নেই।’’

এগরা মহকুমা হাসপাতালে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের এক কর্মী নিত্যানন্দ নায়ক বলেন, ‘‘আগের থেকে কিছুটা ওষুধ বিক্রি কমছে। তবে দোকানে সমস্ত ধরনের ওষুধ ও শল্য চিকিৎসার সরঞ্জাম পাওয়া যায়। অনেক ওষুধ বিক্রি না হওয়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে নষ্ট হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Medicine Shop Egra Fair price shop

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy