Advertisement
০৩ মে ২০২৪

এ বার তো অপেক্ষা মেডিক্যাল কলেজের

ফের ভাঙছে মেদিনীপুর। পূর্ব-পশ্চিমের পরে এ বার আত্মপ্রকাশের অপেক্ষায় নতুন জেলা ঝাড়গ্রাম। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-আইন-আদালত, জেলা ভাঙলে পরিষেবা সহজে মেলার কথা। মেদিনীপুরের বিশিষ্টজনেরা কী চোখে দেখছেন এই জেলা ভাগকে, নতুন জেলার কাছে তাঁদের চাহিদাই বা কী— তাঁদের কথা তাঁদেরই কলমে।

প্রসূন ঘোষ।

প্রসূন ঘোষ।

প্রসূন ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫১
Share: Save:

বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ, রক্তমাখা তুলো, সবেধন নীলমণি কয়েকজন চিকিৎসক আর গুটিকয়েক স্বাস্থ্যকর্মী। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমন ছবিতেই অভ্যস্ত ছিলেন স্বাধীনতা উত্তর ঝাড়গ্রাম মহকুমার মানুষ। রোগ নির্ণয়কারী পরীক্ষার অভাব, উপযুক্ত যন্ত্রপাতি না থাকা অথবা অকাল মৃত্যুই যেন ছিল ঝাড়গ্রামের মানুষের ভবিতব্য। মাওবাদী-আন্দোলনের সময় স্বাস্থ্য পরিষেবায় এল চরম সঙ্কট। রাস্তা অবরোধ, আ্যম্বুল্যান্স পরিষেবার ঘাটতি, আতঙ্কের পরিবেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝাড়গ্রাম এলাকায় কাজে যোগদানের ক্ষেত্রে অনীহা যেন বাড়িয়ে তুলেছিল।

অবস্থার পরিবর্তন শুরু হল ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে। অল্প সময়ের মধ্যে পরিকাঠামোর গুণগত উন্নয়ন শুরু হল কিছুটা আপাত অবিশ্বাস্য উল্কার গতিতে। অল্প সময়ে তিন তিনটি ৩০০ শয্যার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু, লালগড় ও ঝাড়গ্রামে নার্সিং ট্রেনিং স্কুল, ব্লক হাসপাতালগুলিকে রুরাল হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অসুস্থ নবজাতকদের কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ), ১২শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, ২৪ ঘন্টার ফ্রি সিটি স্ক্যান ও ডায়ালিসিস পরিষেবা, আধুনিক অপারেশন থিয়েটার ক্রম-উন্নতিশীল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উদাহরণ বলা যেতে পারে।

২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে পৃথক স্বাস্থ্যজেলা ঘোষণার মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বতন্ত্র জেলা হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আগামী ৪ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই তা সম্পূর্ণতা পাবে। স্বাস্থ্য-শাসন ব্যবস্থা স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। হবে নিজস্ব ওষুধের স্টোর, স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনা বা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি ক্রমাগত প্রক্রিয়া। এমআরআই, বার্ন ইউনিট ট্রমা কেয়ার ইউনিট, হৃদরোগীদের চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র, ক্যানসার রোগীদের কেমোথেরাপির ব্যবস্থা হবে।

আশায় বুক বেঁধেছেন ঝাড়গ্রামবাসী। আমরা অধীর আগ্রহে সেই সোনালি দিনের অপেক্ষায় থাকব যে দিন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হবে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের।

লেখক ঝাড়গ্রাম জেলা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram super speciality hospital Prasun Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE