এক ক্লিকেই মিলবে পছন্দের বইয়ের খোঁজ!
গ্রন্থাগারে গিয়ে পছন্দের বই খুঁজে পেতে সমস্যা পড়েন অনেকেই। কখনও কখনও পছন্দের বই না পেয়ে অনেককে ফিরেও আসতে হয়। পছন্দের বই খুঁজে নিতে মোটা ক্যাটালগের পাতা হাতড়ানোর দিন শেষ হতে চলেছে। এ বার মেদিনীপুর শহরে জেলা গ্রন্থাগারে কম্পিউটারে পছন্দের বইয়ের নাম টাইপ করলেই দেখা যাবে, কোথায় আছে বইটি। আর তারপরে সেখান থেকে গিয়ে বইটি নিয়ে নিলেই হল।
বই খোঁজার পদ্ধতি আরও সহজ করতে সূচীকরণ বা ‘ক্যাটালগিং’-এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই সূচীকরণ বা ‘ক্যাটালগিং’ হল এমন এক পদ্ধতি যার সাহায্যে গ্রন্থাগার ব্যবহারকারীর নানা রকম চাহিদা পূরণ করার জন্য একটি প্রবেশ পথ (অ্যাকশেস পয়েন্ট) তৈরি করা হয়। সাধারণভাবে ‘ক্যাটালগ’-কে তালিকা মনে করা হলেও এটি বহুমুখী বিস্তারিত তথ্য নির্দেশক একটি সার্বিক তথ্যপঞ্জী।
জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎ পান বলছিলেন, “জেলা গ্রন্থাগারে ‘ক্যাটালগিং’-এর কাজ শুরু হয়েছে। এক সংস্থা কাজটি করছে। এর ফলে পছন্দের বই খুঁজে পেতে অনেক সুবিধী হবে। পাঠকরাও উপকৃত হবেন।” গ্রন্থাগার দফতরের এক আধিকারিকের মতে, এক সময় বইয়ের সংখ্যা সীমিত ছিল। পাঠকের সংখ্যাও খুব বেশি ছিল না। ফলে বই খুঁজতে গিয়ে পাঠকেরা সে ভাবে সমস্যায় পড়তেন না। কিন্তু এখন বইয়ের সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি পাঠকদের বহুমুখী চাহিদাও বেড়েছে।
পাঠকদের অসুবিধা দূর করতে বইগুলোকে চিহ্নিত করে একটি তথ্য নির্দেশক তথ্যপঞ্জী তৈরি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ইন্দ্রজিৎবাবু জানান, এই তথ্যপঞ্জীর মধ্যে গ্রন্থকারের নাম, গ্রন্থের নাম, গ্রন্থের বিষয়ের নাম-সহ নানা রকম তথ্য যেমন সংস্করণ, প্রকাশক, পাতার সংখ্যা, সিরিজ, সম্পাদক, অনুবাদক ইত্যাদির সংযোজন থাকে।
ওই আধিকারিক জানাচ্ছেন, গ্রন্থাগারে গ্রন্থ সংগ্রহের সামগ্রিক তথ্য সংবলিত যে বহুমুখী তথ্য নির্দেশিকা তৈরি হয় তাকেই ‘ক্যাটালগ’ বলা হয়। ‘ক্যাটালগ’-এর মাধ্যমেই পাঠক তাঁর পছন্দের বইটির খোঁজ পেতে পারেন। এখানে ‘ক্যাটালগ’ গ্রন্থাগারের সামগ্রিক গ্রন্থসমূহ ও গ্রন্থাগার ব্যবহারকারীর মধ্যে একটি সেতুর কাজ করে। ‘ক্যাটালগ’ যেহেতু বহুমুখী তথ্য নির্দেশক তালিকা, তাই গ্রন্থাগারে লক্ষ লক্ষ বইয়ের মধ্যেও প্রয়োজনীয় বইটি খুঁজে পেতে বিশেষ সাহায্য করে। জেলা গ্রন্থাগারে প্রায় ৬৮ হাজার বই রয়েছে। কয়েক হাজার বই বহু পুরনো। সব বইয়েরই ক্যাটালগিং হবে।
তরুণ প্রজন্ম তো বটেই, একন খুদেরাও আর গ্রন্থাগারে আসে না। তালা ঝুলছে অনেক গ্রন্থাগারের দরজাতেই। ধুঁকছে আরও বহু গ্রন্থাগার। মরা গাঙে জোয়ার আনতে এ বার গ্রন্থাগারের রূপবদলের জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ক্যাটালগিং এরই অন্যতম প্রয়াস। অনেক গ্রন্থাগারে আলমারি, বই রাখার র্যাকগুলোরও জীর্ণ দশা। অনেক বই বাইরেই টেবিলের উপর পড়ে থাকে। তার উপর ধুলো জমে। এখানে-সেখানে দেওয়াল থেকে মাটি খসে পড়ছে। কোনও ভাবে ঠেসাঠেসি করে সেখানেই বইপত্র রাখা রয়েছে। গ্রন্থাগারগুলোয় এই ছবিও নতুন নয়। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎবাবু অবশ্য বলছিলেন, “পাঠকদের জন্যই গ্রন্থাগার। মানুষকে গ্রন্থাগারমুখী করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।” জেলা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, খুব শীঘ্রই ক্যাটালগিংয়ের সুবিধা মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy