Advertisement
০১ মে ২০২৪
Civet Hunted

বাঘুই পাড়ে শিকার, এ বার গন্ধগোকুল

বাঘুই ও কেলেঘাই নদীর জলাভূমি এলাকায় বিলুপ্তি প্রজাতির বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। গত এক দশকে বাঘরোল, গন্ধগোকুল, বনমোরগের সংখ্যা বেড়েছে বলে মত বাসিন্দাদের।

গন্ধগকুল শিকার করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র 

গন্ধগকুল শিকার করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র 

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১৪
Share: Save:

বাঘুই পাড়ে আবার চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য দেখা গেল। একদল শিকারি খড়িঘাসের জঙ্গল থেকে একটি গন্ধগোকুল ধরে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার তাপিন্দায় ঘেসো জঙ্গল ঘিরে তোলপাড় করে শিকার করা হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে এই বাঘুই খালের পাশেই একটি বাঘরোল ধরা পড়েছিল। তবে লোকজন এসে পড়ায় সেটিকে বাঁচানো গিয়েছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার শিকারের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু বন দফতরের শিকার আটকাতে উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। চোরাশিকারিদের দাবি, মাংসের জন্যই তারা বন্যপ্রাণ শিকার করতে
বাধ্য হচ্ছে।

বাঘুই ও কেলেঘাই নদীর জলাভূমি এলাকায় বিলুপ্তি প্রজাতির বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। গত এক দশকে বাঘরোল, গন্ধগোকুল, বনমোরগের সংখ্যা বেড়েছে বলে মত বাসিন্দাদের। কিন্তু বন্যপ্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেই বেড়েছে চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য। বৃহস্পতিবার তাপিন্দায় তারই প্রমাণ মিলল। কয়েক সপ্তাহ আগে বিশ্বনাথপুরে বাঘুই খালের পাড়ে জঙ্গলে শিকারিদের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েছিল একটি পূর্ণ বয়স্ক বাঘরোল।

কেন শিকারের এত রমরমা? অভিজ্ঞ মহল জানাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-১ ব্লকের বিশ্বনাথপুর, নৈপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের রাধানগর এলাকায় আদিবাসী পরিবারের বাস। এই পরিবারগুলো খাবারের সন্ধানে বন্যপ্রাণী শিকার করে। বৃহস্পতিবার গন্ধগোকুল শিকারি দলটিও দাবি করেছে, রেশনে বিনামূল্যে চাল, আটা মিললেও মাছ, মাংস আনাজপাতি কেনার মতো টাকা সেই অর্থে নেই তাদের। তাই নদী, পুকুর থেকে কুঁচো মাছ, কচ্ছপ শিকার করতে হয়। কেলেঘাই নদী ও বাঘুই খাল এলাকায় জলাভূমিতে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি থাকায় সহজে শিকার করা যায়।

শিকারের ফলে এলাকায় জীববৈচিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিকার বন্ধে বন দফতর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বাজার ও বাসস্টপে সচেতনতার বোর্ড লাগিয়েছে। কিন্তু কাজ কিছু হয়নি বলেই দাবি বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, নদী তীরবর্তী এলাকায় চোরাশিকারিদের দাপট বাড়লেও নজরদারি নেই বন দফতরের।

চোরাশিকারিদের হাতে বন্যপ্রাণী বিপন্ন হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা।পটাশপুর-১ ব্লক জীববৈচিত্র কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য প্রশাসনের সদিচ্ছা নেই। এ ভাবে বন্যপ্রাণ শিকার হলে পরিবেশের সমূহ বিপদ। অবিলম্বে সরকারের উচিত এই বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া।’’

জেলা মুখ্য বন আধিকারিক অনুপম খান বলেন, ‘‘চোরাশিকার বন্ধে জেলা জুড়ে আইনি সতর্কতার বোর্ড লাগানো হয়েছে। নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patashpur Poachers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE