Advertisement
E-Paper

শব্দ-তাণ্ডব রুখতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ, ধৃত ৫

স্থানীয় সূত্রের খবর, চার নম্বর ওয়ার্ডে লক্ষ্মী পুজো ঘিরে দু’টি ক্লাবের মধ্যে কার্যত রেষারেষি চলে। কার জাঁকজকম বেশি, সে নিয়ে রীতিমতো চলে লড়াই। এ বছর পুজোর কয়েক দিন আগে থেকেই এলাকায় বিকট শব্দে মাইক এবং ডিজে বাজানো হচ্ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২৬
ভাঙচুরের পরে পুকুরে পড়ে ডিজে। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পরে পুকুরে পড়ে ডিজে। নিজস্ব চিত্র

লক্ষ্মীপুজোয় শব্দদানবের তাণ্ডব রুখতে গিয়ে মঙ্গলবার কার্যত রণক্ষেত্রের চেহরা নিল হলদিয়া পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসুদেবপুর। ভাঙচুর থেকে শুরু করে মারধর করা হল পুলিশকে। ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করল পাঁচ জনকে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, চার নম্বর ওয়ার্ডে লক্ষ্মী পুজো ঘিরে দু’টি ক্লাবের মধ্যে কার্যত রেষারেষি চলে। কার জাঁকজকম বেশি, সে নিয়ে রীতিমতো চলে লড়াই। এ বছর পুজোর কয়েক দিন আগে থেকেই এলাকায় বিকট শব্দে মাইক এবং ডিজে বাজানো হচ্ছিল। এ বিষয়ে স্থানীয়েরা থানায় অভিযোগও জানিয়েছিলেন। নির্ধারিত শব্দমাত্রা বাইরে মাইক বাজানো যাবে না বলে প্রথমে থানা থেকে ওই দুটি ক্লাবকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়। কিন্তু সেই সতর্কবার্তা না শুনেই দু’টি ক্লাবই উচ্চমাত্রায় মাইক বাজাতেই থাকে।

রবিবার পুজো শেষ হলেও সোম এবং মঙ্গলবারও শব্দের দাপট কমেনি। এর পরে ১৪ অক্টোবর দুর্গাচক থানার তরফ থেকে ক্লাবগুলিকে নোটিস দিয়ে সতর্ক করা হয়। পুলিশের হুঁশিয়ারি এবং গ্রামবাসীদের অনুরোধ কর্ণপাত না করে ১৫ অক্টোবর রাতে দু’টি ক্লাবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উচ্চমাত্রায় মাইক ও ডিজে বাজানো হয় বলে অভিযোগ। এর পরেই পুলিশ সেখানে যায়। শব্দের মাত্রা কমানোর কথা বলতেই দু’টি ক্লাবের লোকেরা রেষারেষি ভুলে একত্রিত ভাবে পুলিশকে মারধর করে বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি কিছুক্ষণের মধ্যেই রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে। এসআই রাজু কুণ্ডু, এএসআই মানস ভট্টাচার্য এবং পুলিশের গাড়ির চালক মৃণাল দাস উকিল ওই ঘটনায় আহত হন। শেষে দুর্গাচক থানা থেকে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রেফতার করা হয় বনমালী দণ্ডপাট, শ্রীমন্ত আদক, জয় দিন্দা, শুভেন্দু মাইতি এবং গোবিন্দ সামন্ত নামে পাঁচজনকে। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি সাউন্ড এডিটিং মিক্সচার মেশিন ও কয়েকটি মাইক্রোফোন উদ্ধার করেছে।

বুধবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ইতি-উতি ছড়িয়ে রয়েছে ভাঙা কাচ। ডিজে বক্স ভাসছে পুকুরে। পুজোর দিন দুয়েক কেটে গেলেও প্রতিমা এখনও রয়েছে মণ্ডপে। এলাকার বাসিন্দা কবিতা সামন্ত বলেন, ‘‘রাতে খুব জোরে মাইক বাজছিল। কিছুক্ষণ পরে চিৎকারের শব্দ পাই। দেখি, এলাকা পুলিশে ছয়লাপ।’’ গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, যারা মাইক বাজাচ্ছিল, পুলিশ তাদের না ধরে নিরীহদের ধরে নিয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের হেনস্থাও করা হয়েছে।

হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারবার সতর্ক করার পরেও ওই দুই পুজো কমিটি আমাদের কর্ণপাত করেনি। পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে ও গাড়িও ভাঙচুর করেছে। গ্রামবাসীদের কোনও হেনস্থা করা হয়নি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ ধৃতদের এ দিন হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এ দিকে, প্রতিমা বিসর্জনের জোরে মাইক, সাউন্ড বক্স বাজানোর অভিযোগে এ দিন দুপুরে তিন জনকে আটক করেছে তমলুক থানার পুলিশ। এদিন তালপুকুর এলাকায় লক্ষ্মী প্রতিমার বিসর্জনে যন্ত্রচালিত ভ্যানে প্রচুর মাইক-সাউন্ড বক্স বেঁধে প্রবল শব্দে গান বাজিয়ে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে শোভাযাত্রা হচ্ছিল। এ জন্য পুলিশ সেখানে গিয়ে তিন জনকে আটক করে।

Crime Violence Police Immersion Laxmi puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy