Advertisement
E-Paper

চার্জশিট দেয়নি পুলিশ, জামিন মূল অভিযুক্তের

গ্রেফতার করার ৯০ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। তাই জামিন মঞ্জুর হল বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত রাধেশ্যাম পৈড়ার। শনিবার ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় এসিজেএম আদালতের বিচারক টিকেন্দ্রনারায়ণ প্রধান রাধেশ্যামবাবুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪০

গ্রেফতার করার ৯০ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। তাই জামিন মঞ্জুর হল বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত রাধেশ্যাম পৈড়ার। শনিবার ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় এসিজেএম আদালতের বিচারক টিকেন্দ্রনারায়ণ প্রধান রাধেশ্যামবাবুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। অভিযুক্তের আইনজীবী তপন চৌধুরী আদালতে বলেন, “তিন মাসেও পুলিশ তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দিতে পারেনি। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আমার মক্কেলকে অভিযুক্ত করার মতো তথ্যপ্রমাণ পুলিশের হাতে নেই।”

তপনবাবু আদালতে সওয়াল করেন, “৯০-এর দশক থেকে আমার মক্কেল ওই ব্যাঙ্কের এক জন সোনা পরীক্ষক মাত্র। তিনি ব্যাঙ্কের কর্মী নন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে নকল সোনাকে আসল সোনা বলে চালিয়ে কয়েকশো বন্ধকী ঋণ মঞ্জুর করানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। একজন বহিরাগত ব্যক্তির পক্ষে এমন দুঃসাধ্য কাজ করা অসম্ভব। সর্ষের মধ্যে ভূত রয়েছে। কিন্তু সেই চক্রকে আড়াল করার জন্য আমার মক্কেলকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে। এমনকী জেলবন্দি থাকাকালীন তাঁকে খড়্গপুর গ্রামীণ ও বেলিয়াবেড়া থানার দু’টি ডাকাতির পুরনো মামলাতেও অভিযুক্ত করেছিল পুলিশ। ওই দু’টি মামলায় আগেই জামিন মঞ্জুর হয়েছে।’’ আদালত সূত্রের খবর, রাধেশ্যামবাবু এখন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন। জামিনের আদেশনামার প্রতিলিপি আলিপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রতিলিপি সংশোধনাগারে পৌঁছনোর পর তবেই তিনি ছাড়া পাবেন।

বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের তিনটি শাখায় সোনা পরীক্ষকের (গোল্ড টেস্টার) কাজ করতেন বছর পঞ্চাশের রাধেশ্যামবাবু। অভিযোগ, গত চার-পাঁচ বছরে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের বেলিয়াবেড়া, গোপীবল্লভপুর ও বালিগেড়িয়া শাখায় ‘নকল সোনা’ বন্ধক রেখে কয়েকশো ব্যক্তির নামে মোট ৪ কোটি ৪৮ লক্ষ ৯১ হাজার ১৪৩ টাকা বন্ধকী ঋণ (গোল্ড বন্ড) দেওয়া হয়। প্রতিটি ঋণের ক্ষেত্রে সোনা পরীক্ষা করে সেগুলিকে খাঁটি বলে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন রাধেশ্যামবাবু। গত জুন মাসে ব্যাঙ্কের বেলিয়াবেড়া শাখায় অনাদায়ী খেলাপি ঋণের পরিমাণ খতিয়ে দেখার সময় বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই তিনটি শাখার বন্ধকী ঋণের যাবতীয় সোনা মজুত রাখা হয় ব্যাঙ্কের গোপীবল্লভপুর শাখায়। গত ৪ জুলাই ব্যাঙ্কের গোপীবল্লভপুর শাখার ম্যানেজার সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বেলিয়াবেড়া থানায় রাধেশ্যামবাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণা, তছরূপ, নথিজাল করা ও ষড়যন্ত্রের জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ওই দিনই রাধেশ্যামবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ঝাড়গ্রামের জেলা দায়রা আদালতে রাধেশ্যামবাবুর জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছিল।

সরকারি কৌঁসুলি পবিত্র রানা বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৭ (২) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, গ্রেফতারের দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করতে হবে। না হলে ৯১ দিনের মাথায় অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর হবে। রাধেশ্যামবাবুর বিরুদ্ধে ৯০ দিনের মধ্যে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করতে না পারায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।” কিন্তু কেন দাখিল করা গেল না চার্জশিট? পুলিশ অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছে।

police post office money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy