বন্যপ্রাণীর পায়ের ছাপ। নিজস্ব চিত্র
বন দফতর আশ্বস্ত করেছে। কিন্তু তার পরেও এলাকায় মঙ্গলবার থেকে ছড়িয়েছে ‘চিতা বাঘে’র আগমণের গুজব। সেই গুজবের জেরে বন্য প্রাণীটিকে যাতে পিটিয়ে না মেরে ফেলা হয়, সে জন্য কোলাঘাটের বাঙালপুর গ্রামে সচেতনতামূলক পোস্টার লাগাল বন দফতর।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাঙালপুর গ্রাম লাগোয়া জানা পাড়ার খড়ি জঙ্গলে ‘বাঘ’ এসেছে মঙ্গলবার গুজব ছড়ায়। এলাকায় একটি শেয়ালের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পাশাপাশি, মোবাইলের ক্যামেরায় চিতাবাঘের মতো গায়ে ছোপ দেওয়া একটি বন্য প্রাণীর ছবিও ধরা পড়ে। এর পরেই ‘বাঘ’ মারতে লাঠি হাতে খড়ি জঙ্গলে তল্লাশি শুরু করেন গ্রামবাসীরা। ফাটানো হয় বাজি।
বন দফতরকে ওই প্রাণীর ভিডিওটি পাঠানো হয়। তাতে দফতর প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, প্রাণীটি বড় আকারের বাঘরোল হতে পারে। তাদের গায়েও চিতাবাঘের মতো ছোপ থাকে। গ্রামবাসীদের প্রাণীটিকে মারতে বারণ করেন বন দফতরের আধিকারিকেরা।
উল্লেখ্য, এর আগেও পূর্ব মেদিনীপুরে বাঘরোল পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে বাঘমারির জঙ্গলে একটি পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকেও পিটিয়ে মারা হয়েছিল। ওই সব ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করেছিলেন বন দফতর।
ওই ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য বুধবার সকালে পাঁশকুড়া ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের তিনজন কর্মী এলাকায় আসেন ঘটনাস্থলে। সংগ্রহ করেন প্রাণীটির পায়ের ছাপের নমুনা। গ্রামবাসীদের প্রাণীটি সম্পর্কে বোঝান বন দফতরের কর্মীরা। বাঘরোল হিংস্র প্রাণী নয়— এই মর্মে এলাকায় পোস্টার লাগায় বন দফতর। সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে গ্রামবাসীদের মধ্যে বিলি করা হয় লিফলেটও।
দেড়িয়াচকের বাসিন্দা অপূর্ব গোস্বামী বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ বাঘরোল সম্পর্কে খুব কমই জানেন। তাই মানুষজন কিছুটা ভয়ে রয়েছেন। বন দফতরের কর্মীরা আজ গ্রামে এসে বুঝিয়ে গিয়েছেন।’’ জঙ্গলের মধ্যে খাদ্য সংকটে প্রাণীটি ভুগছে বলে মনে করছেন বন দফতরের কর্তারা। আপাতত প্রাণীটি গভীর জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। জঙ্গলের মধ্যে দু’রকম পায়ের ছাপ মেলায় বন দফতরের কর্মীরা মনে করছেন, বাঘরোলটির সঙ্গে একটি বাচ্চাও থাকতে পারে।
পাঁশকুড়ার ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার বাণীব্রত সামন্ত বলেন, ‘‘বাঘরোল মূলত মাছ খায়। এরা মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। তবে প্রাণীটি ভয় পেলে মানুষের ওপর আক্রমণ করতে পারে।’’ বন দফতরের অনুমান, মাছের অভাবে প্রাণীটি জন বসতি এলাকায় হাঁস, মুরগির খোঁজে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy