পিঠোপিঠি রথ এবং ইদ। বুধবার রথযাত্রা ঘিরে সম্প্রীতির ছবি দেখল শহর মেদিনীপুর।
এ দিন সন্ধেয় নিমতলাচকে যখন রথের শোভাযাত্রা বেরোয়, তখন হাতে হাত ধরে সহযোগিতা করলেন শেখ সানি, আরিফ রহমানরা। শেখ সানি বলছিলেন, “আজ রথ, কাল ইদ। এটা তো সম্প্রীতির মেলবন্ধনের উৎসবই।” তাঁর কথায়, “ধর্ম যে যার নিজের কাছে। শহরে আমরা সব ধর্মের মানুষই মিলেমিশে থাকি।” শুধু তাই নয়, আজ, বৃহস্পতিবার ইদ উপলক্ষ সেজে উঠেছে শহরের বিভিন্ন মহল্লাও। সেই সব মহল্লার পাশের রাস্তা দিয়ে এ দিন যখন রথ গিয়েছে, তখন সব রকম সহযোগিতা করেছেন ইদ উৎসব কমিটির সদস্যরা।
মেদিনীপুরের পঞ্চুরচকের অগ্নিকন্যা ক্লাবের পক্ষ থেকে এ দিন রথযাত্রায় সামিল হওয়া মানুষদের সরবত দেওয়া হয়। এ দিন গোলকুয়াচকের কাছে মেলা বসে। বেলা বাড়তেই মেলায় ভিড় জমতে থাকে। বিকেলে জগন্নাথ মন্দিরের সামনে থেকে রথ বেরোয়।
উৎসবের দিনে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত ছিল পুলিশও। মেদিনীপুরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোয় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ছিল পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশও। মেদিনীপুর আলম কমিটির সদস্য রাজেশ হোসেন বলছিলেন, “মেদিনীপুর সম্প্রীতির শহর। এখানে যে কোনও উৎসবের সঙ্গেই ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকেন সব ধর্মের মানুষ।”
খড়্গপুরেও সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে রথযাত্রা। এ দিন দুপুর ২টোয় নিউ সেটেলমেন্টের জগন্নাথ জিউর মন্দিরের রথযাত্রার সূচনা করেন আইআইটি-র প্রাক্তন ডিরেক্টর দামোদর আচারিয়া। ঐতিহ্যবাহী সুভাষপল্লির রথযাত্রা উপলক্ষে আট দিন ব্যাপী চলবে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলায় বসেছে ৩০টি স্টল। প্রতিবছরের মতো এ বারও সুভাষপল্লি গৌড়ীয় মঠ থেকে রথ আসা যাত্রা ময়দানে। সেখানে রথের মেলার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল। শহরের দক্ষিণে তালবাগিচা রথতলা ময়দানে মহাসমারোহে পালিত হয়েছে রথযাত্রা।
রথ ও ইদ উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে খোঁজখবর নিতে বুধবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। সার্কিট হাউসে বৈঠকে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ খবর নেন মন্ত্রী। সৌমেনবাবু বলেন, “সব সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে আনন্দে রথযাত্রা ও ইদে সামিল হন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তা দেখতেই আমি এসেছিলাম।” মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সভাপতি হাজি মিরাজও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “রথযাত্রা উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা। তারপরেই ইদ। খুশির ইদে সকলে আনন্দে মেতে উঠুন।”
শব্দদূষণ রুখতে মুসলিম কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিটি মহল্লায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মাইক বাজালেও তা যেন শব্দসীমা লঙ্ঘন না করে। মিরাজবাবুও জানিয়েছেন, “যদি কোনও এলাকা থেকে এ রকম অভিযোগ আসে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। নিজেরাও শহর জুড়ে ঘুরে বেড়াব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy