Advertisement
E-Paper

২৫ কিমি উজিয়ে তবে মেলে ডাক্তার

চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রের সবচেয়ে নীচু স্তর হল উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে এখানে কোনও চিকিৎসক থাকেন না।

বাঁশপাহাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য এই জায়গাটি চিহ্নিত হয়েছে।

বাঁশপাহাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য এই জায়গাটি চিহ্নিত হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:১০
Share
Save

ডাক্তার দেখাতে পাড়ি দিতে হয় ২৫ থেকে ৩০ কিমি। রাত বিরেতে অসুখ-বিসুখ হলে সমস্যা আরও প্রকট।

জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামের প্রান্তিক এলাকা বাঁশপাহাড়ি থেকে ব্লক সদর বেলপাহাড়ির গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্ব ২৫ কিমি। সমস্যা মেটাতে চাকাডোবা ও বাঁশপাহাড়ির মাঝে নেগুড়িয়া ক্যাম্পের সামনে ১০ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য কয়েক বছর আগে তোড়জোড় শুরু করেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যে ফা‌ইলপত্র পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তা আর নাড়াচাড়া হয়নি। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য প্রশাসনিক মহলে বার বার ছুটেছেন স্থানীয়রা। আখেরে লাভের লাভ কিছু হয়নি।

চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রের সবচেয়ে নীচু স্তর হল উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে এখানে কোনও চিকিৎসক থাকেন না। চিকিৎসকের দেখা পেতে হলে যেতে হবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বেলপাহাড়ি ব্লকে শিলদা, ওদলচুয়া ও এড়গোদা এই তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। আর বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বাঁশপাহাড়ির দূরত্ব ২৫কিমি। আবার বাঁশপাহাড়ি অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ঢেঁকিয়া-ভীমার্জুন, খেড়িয়ারাতা, পচাপানি, মিনারডি, বগডুবা, চিটামাটি, ছুরিমারা এই গ্রামগুলি আরও ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষজন এখনও সমস্যায় পড়েন।

পচাপানি গ্রামের দীপক দাস, বাঁশপাহাড়ির আনন্দ দাসরা বলছেন, ‘‘এলাকায় মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়লে খুবই সমস্যা। কাছেপিঠে কোথাও চিকিৎসক নেই। নেগুরিয়া ক্যাম্পের ১০ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। সমস্যাও মেটেনি।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে নেগুরিয়ায় ১০ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ হয়েছিল। জায়গা পরিদর্শন হয়েছিল। কিন্তু আর অগ্রগতি হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বাঁশপাহাড়িতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির বিষয়টি রাজ্যে জানানো রয়েছে। অনুমমোদন এখনও মেলেনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদাও বলছেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দা দাবি রয়েছে বলে শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে রাজ্য থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি।’’

এ দিকে জেলা শহর ঝাড়গ্রামে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত বছর থেকে পঠন-পাঠন চালু হয়েছে। কিন্তু সেখানেও পরিষেবা আগের মতোই রয়েছে বলে অভিযোগ। ল্যাবরেটরির কিছু পরিষেবা বেড়েছে। আর আগে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় জটিল ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে মৃতদেহ ‘রেফার’ করা হত। এখন তা বন্ধ রয়েছে।

আগে জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মেডিসিন, শল্য, স্ত্রী ও প্রসূতি, শিশু বিভাগ ছিল। এখনও তা রয়েছে। নতুন করে বিভাগ কোনও বাড়েনি। আগে ল্যাপ্রোস্কপি হত। এখন তা হয় না। ল্যাপ্রোস্কপির যন্ত্রাংশয় পড়ে পড়ে ধুলো জমছে। আর বার্ন ইউনিট, নিউরো ও কার্ডিয়োলজির চিকিৎসায় এখনও রোগীকে রেফার করতে হয়। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যালে এমআরআইয়ের ব্যবস্থাটুকুও নেই।

চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের উপর পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড ও বাঁকুড়া জেলার মানুষজন নির্ভরশীল। ফলে, বার্ন ইউনিট, নিউরো ও কার্ডিয়োলজি বিভাগ চালু করা খুবই প্রয়োজন। শুধুমাত্র বর্হিবিভাগে কিছু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসলেও তাঁদের দেখা মেলা দায়। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ধাপে ধাপে বিভিন্ন পরিষেবা চালু হবে। (শেষ)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Banshpahari jangal mahal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}