পুকুরে ভর্তি কচুরি পানা। পুকুর-ঘাটে গাদা করে পড়ে রয়েছে ময়লা-আবজর্নার স্তূপ। দুর্গন্ধে টেকা দায়। অথচ, সকাল হলেই সেই পুকুর ঘাটে ভিড় এলাকার বাসিন্দাদের। কেউ স্নানে ব্যস্ত, চলছে থালা-বাসন ধোওয়া থেকে জামা-কাপড় পরিষ্কারও। এই ছবি কোনও অজ গ্রামের নয়। ঘাটাল শহরের নিত্যদিনের চেনা ছবি এটা।
দিন কয়েক আগেই চন্দ্রকোনার বেলাদণ্ড গ্রামে ডায়েরিয়ায় শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখনও ওই গ্রামে বহু মানুষের চিকিৎসা চলছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দিয়েছেন, পুকুরের দূষিত জল থেকেই দূষণ ছড়িয়েছে। ওই গ্রামে নিকাশির ব্যবস্থা নেই। ফলে নোংরা-আবজর্না সব পুকুরে গিয়ে পড়ছে। সেই জলই ব্যবহার করছেন বেলাদণ্ড গ্রামের শতাধিক পরিবার। বেলাদণ্ড গ্রামে বন্ধ সজলধারা প্রকল্প। কিন্তু ঘাটালের মতো মহকুমার সদর শহরের ছবিটা তো তার থেকে ভিন্ন কিছু বলছে না!
পুকুরের জল ব্যবহার বন্ধ করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। এমনকী, নলকূপের জল পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করলেও খাবার আগে ফুটিয়ে নেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। কিন্তু বছরভর এই প্রচারের পরও মানুষের জীবনে তার প্রভাব কি আদৌ আছে? পুকুরের জল ব্যবহারের ট্রাডিশন এখনও সমানে চলছে। আর তার জেরে বাড়ছে পেটের নানা অসুখ। ছড়চ্ছে চর্মরোগ। ঘাটাল শহরের কৃষ্ণনগর, গম্ভীরনগর, আড়গোড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় এখনও পুকুরের জলই বেশি ব্যবহার করেন বাসিন্দারা। সকাল হলেই ঘাটাল শহরের শুঁড়ি পুকুর, গদার পুকুর থেকে খড়ার পুর শহরের কারক পাড়ার শোনাচাপড়ার পুকুরে ভিড় জমান বহু মানুষ।